সাইয়েদ বাবু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কুড়িগ্রামের প্রথম শহীদ মিনার যেমন আছে এখন

কুড়িগ্রামের মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে জেলার প্রথম শহীদ মিনার। ছবি : কালবেলা
কুড়িগ্রামের মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে জেলার প্রথম শহীদ মিনার। ছবি : কালবেলা

কুড়িগ্রাম জেলা শহরের অবস্থিত কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ। এই কলেজটি ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত। এর প্রধান ফটকেই অবস্থিত জেলার প্রথম শহীদ মিনার। ১৯৫৩ সালে ভাষাশহীদদের স্মরণে গড়ে তোলা হয় এ মিনারটি। তবে অযত্ন ও অবহেলায় সারা বছরই অরক্ষিত থাকে শ্রদ্ধার এ স্থানটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শহীদ মিনারের যথাযথ মর্যাদা, পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করা হয় না। সারা বছর ঐতিহ্যবাহী এই শহীদ মিনার বেহাল অবস্থায় থাকে। মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। তবে সেটি প্রয়োজনের থেকে খুবই সামান্য। ২১ ফেব্রুয়ারির কিছু দিন পর থেকেই আবার বেহাল হয়ে পড়ে শহীদ মিনারটি।

সম্প্রতি শহীদ মিনারটিতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে জুতা পরে শহীদ মিনারের বেদিতে ঘোরাফেরা করছেন। মিনারের মূল বেদিতেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে ময়লা-আবর্জনা, সিগারেটের প্যাকেটসহ অসংখ্য উচ্ছিষ্ট অংশ। তেমনি ময়লা-আবর্জনায় ভরে রয়েছে চারপাশও। শহীদ মিনারের পেছনে প্রশ্রাব করছেন অনেকে। গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।

এদিকে শহীদ মিনারের গা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে দোকান। আলো কমলেই বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। দিনে ও রাতে হরহামেশাই শহীদ মিনারে বসে ধূমপান করে বখাটেরা।

স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল রাব্বী বলেন, কুড়িগ্রামের প্রথম শহীদ মিনারটি আমাদের অনেক স্মৃতিবিজড়িত। এখন অযত্ন-অবহেলায় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। শহীদ মিনারটিতে যেন আগের মতো প্রাণচঞ্চল ফিরে আসে সে জন্য কর্তৃপক্ষ যেন সেই পরিবেশ তৈরি করেন।

তৎকালীন শহীদ মিনারটি তৈরিতে অংশ নিয়েছিলেন ভাষাসৈনিক আব্দুল করিম সরকার। তিনি বলেন, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় কুড়িগ্রাম ছিল মহকুমা। কুড়িগ্রাম হাই স্কুলের ছাত্ররাই সব আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতেন এবং নেতৃত্ব দিতেন। ঢাকায় ২১ ফেব্রুয়ারির শোকাবহ ঘটনা এখানকার মানুষ জানতে পেরেছিলেন দুই দিন পর। এরও কয়েক দিন পর কারমাইকেল কলেজে অধ্যয়নরত ভূরুঙ্গামারীর অধিবাসী মজিবর রহমান এখানে এসে উদ্বুদ্ধ করলে হাই স্কুলের প্রগতিশীল কিছু ছাত্র যোগ দেন ভাষা আন্দোলনে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ছাত্ররা প্রথম সমাবেশটি করেন বাজারের কালীবাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গায়। এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকজন ছাত্র ঝুঁকি নিয়ে ১৯৫৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে চুপিসারে গড়ে তোলেন কুড়িগ্রামের এই প্রথম শহীদ মিনার।

শহীদ মিনারটির রক্ষণাবেক্ষণের বিষয় জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম বলেন, আপাতত পৌরসভা থেকে সেটি সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই। এটি কলেজ কর্তৃপক্ষের বিষয়।

কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, কলেজে একটি পুরোনো শহীদ মিনার রয়েছে। মূলত এটিই কুড়িগ্রামের প্রথম শহীদ মিনার। এ ছাড়া কলেজে আরেকটি শহীদ মিনার রয়েছে। ফলে পুরোনো শহীদ মিনারটি অনেকটাই অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অতি দ্রুত গভর্নিং বডির সঙ্গে কথা বলে শহীদ মিনারটি সংস্কার করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়ে মির্জা গালিবের পোস্ট

মায়ামিতে হতে যাচ্ছে লা লিগার ম্যাচ!

বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় গেলে দেশে চাঁদাবাজি বাড়বে : চরমোনাই পীর

আওয়ামী সংশ্লিষ্টতা বিতর্কে বিসিবি থেকে বাদ ইসফাক আহসান

সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় তিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে যা বললেন আমিনুল

১৩ বছরের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চায় গাজীপুরবাসী

সুন্দরবনে ভেসে গিয়ে বেঁচে ফিরলেন কুয়াকাটার পাঁচ জেলে

শিশু হত্যার দায়ে একজনের ৭ বছরের কারাদণ্ড

সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

১০

যুক্তরাজ্যের বিশেষ দূতের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধিদলের বৈঠক

১১

পাইকগাছা রিপোর্টার্স ইউনিটির দ্বি-বার্ষিক কমিটি গঠন

১২

বৃষ্টি ও ভ্যাপসা গরম নিয়ে নতুন বার্তা আবহাওয়া অফিসের

১৩

গুগলে দ্রুত প্রয়োজনীয় তথ্য জানার ৭ কৌশল

১৪

পুনরায় বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হলেন মনজুর আলম

১৫

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আ.লীগ নেতা ও তার ছেলের ইলিশ শিকার

১৬

কবরস্থান-মসজিদ রক্ষায় রেলকর্মীদের আলটিমেটাম

১৭

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকার / এককভাবে সরকার গঠনে আত্মবিশ্বাসী তারেক রহমান

১৮

চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যের প্রতারণা, সেনা অভিযানে গ্রেপ্তার

১৯

কোরআনে হাফেজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

২০
X