দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জরতী তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি দলটির তৃণমূল থেকে ওঠে আসা একজন রাজনীতিবিদ। তার জীবন তেমন সহজ ছিল না। পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছেন বিয়ের পর। বলা যায়, বিয়েই এ নারীর জীবন বদলে দেয়।
১৯৮০ সালের পয়লা জানুয়ারি দুর্গম বিলাইছড়ি উপজেলার কুতুপদিয়া গ্রামে পদ্মমনি তঞ্চঙ্গ্যা ও খুঅংপুক তঞ্চঙ্গ্যার কোল আলো করে জন্ম নেন জরতী। তিনি মা-বাবার চতুর্থ সন্তান। ১৯৯৬ সালে কাপ্তাইয়ের জীবতলী ইউনিয়নের তরুণ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জরতী। এরপরই তার জীবন বদলাতে শুরু করে।
বিবাহ সূত্রে জরতী চলে আসেন কাপ্তাই উপজেলার জীবতলীতে। সেখানে স্বামী তরুণ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা ও শ্বশুর যতীন চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার সহযোগিতায় আবার পড়ালেখা শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে পাস করেন এসএসসি।
১৯৯৮ সালে স্থানীয় এক শুভাকাঙ্ক্ষী চিত্তরজ্ঞন চাকমার পরামর্শে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সদস্যভুক্ত হন। ২০১১ সালে জীবতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হন সংরক্ষিত নারী সদস্য। ওই বছর জীবতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি এ পদে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে এক মেয়াদে ইউপি সদস্য থাকার পর স্থানীয় কারবারির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
জরতীর স্বামী তরুণ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শ্বশুর যতীন চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা ১১৭ নম্বর কৌশল্যা ঘোনা মৌজার হেডম্যান এবং রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। জরতী তঞ্চঙ্গ্যার শাশুড়ির বোন মালতি রানী তঞ্চঙ্গ্যা ছিলেন হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে প্রথম সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। জরতী তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে দ্বিতীয় সংসদ সদস্য হতে যাচ্ছেন।
এ নারী দুই সন্তানের জননী। যার মধ্যে এক ছেলে ও এক কন্যাসন্তান। জরতী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, তৃণমূলকে বিবেচনায় নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন। আর আমাকে এই পদে আনতে স্থানীয়ভাবে সবকিছু করেছেন আমার অভিভাবক রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এ ছাড়া কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি প্রয়াত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন চাকমাকে যিনি আমাকে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হতে উৎসাহিত করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে তৃণমূল থেকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যাচ্ছেন। সুযোগ পেলে আমি তিন পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সরকারের সব প্রকার উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে কাজ করব।
মন্তব্য করুন