ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৩ পিএম
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বেইলি রোডে আগুন

‘আমি থেকে কী করুম, আমাকেও নিয়ে যাইতাগা’

আহাজারি করছেন মা হেলেনা বেগম। ছবি : কালবেলা
আহাজারি করছেন মা হেলেনা বেগম। ছবি : কালবেলা

‘আল্লাহ তুমি আমাকে না নিয়ে ছেলেকে কেন নিলা। আমি থেকে কী করুম। আমাকে নিয়ে যাইতাগা’- এভাবেই বৃদ্ধ মা হেলেনা বেগম অবিরাম বিলাপ করছেন। প্রবাসী ছেলেসহ পুরো পরিবারের মৃত্যুর খবরে তিনি দিশেহারা। চিৎকার করতে করতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। তার বুক ভরা কান্না যেন কোনোভাবেই থামছে না।

এ মায়ের ছেলে ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫)। রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনি নিহত হন। তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) ও ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহও (৭) একই ঘটনায় মারা গেছেন।

এ পরিবারটির বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে। তাদের বাড়ি উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে। তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। একই পরিবারের পাঁচজন নিহতের খবরে পুরো গ্রামও শোকাহত।

জানা গেছে, সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে চারটি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর মগবাজার বিটিসিএল স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন। শুক্রবার (১ মার্চ) তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা এলেনও। কিন্তু লাশ হয়ে একে একে অ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন তারা।

এদিকে লাশ পৌঁছার পর মায়ের আহাজারি আরও বাড়ে। কিন্তু কে তাকে দেবে সান্ত্বনা। বারবার নিজের জীবনের বিনিময়ে ছেলেকে জীবিত দেখতে চাইছেন। বৃদ্ধ মায়ের বিলাপে ভারী হয়ে গেছে পরিবেশ।

সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। দেড় মাস আগে দেশে এসে পুরো পরিবারকে ইতালিতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু আগুনে পুড়ে সবকিছু শেষ।

বিলাপ করতে করতে মা হেলেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেসহ পুরো পরিবার আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। আমি বেঁচে থেকে আর কী করুম। আমার ছেলেকে রেখে আল্লাহ আমারে নিয়ে যাইতগা। আমি এই শোক সইব কী করে।’

নিহত পাঁচজনের কবর বাড়ির পাশে একটি কবর স্থানে খোঁড়া হয়। মরদেহগুলো বাড়িতে আসার পর বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের মরদেহ দাফন করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাপলা চত্বর গণহত্যার বিচারে আলাদা কমিশন গঠনের দাবি

‘১৭ বছরে ব্যবসা ছেড়ে ভারতে গেছেন অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী’ 

ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ গোপালগঞ্জ : নুরুল হক 

ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে ২৩ দল

আন্ডারটেকার ও মাইক টাইসন আসছেন ‘বিগ বস ১৯’-এ!

চিলিতে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

সাবেক প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে গ্রেপ্তার

রাতে যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির আভাস

সাফে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

১০

পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৮৮০

১১

চীন সফরে নাহিদের সঙ্গে যাচ্ছেন যারা

১২

ব্যালট বাক্সের হিসাব চেয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের ইসির নির্দেশ

১৩

এক দশক পর কারামুক্ত ব্লগার ফারাবী

১৪

১০ মাসেও মেলেনি মোস্তাফিজ হত্যার রহস্য, থামছে না মায়ের কান্না

১৫

নিজের যেসব বদঅভ্যাসে লিভারের ক্ষতি করছেন না জেনেই

১৬

জুলাই সনদ নিয়ে মতামত জমা দিয়েছে এনসিপি

১৭

‘দুর্ভিক্ষ’ শুরু হয়েছে গাজায়, হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল

১৮

তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন দেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি : এ্যানি

১৯

৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত, সরকারের ব্যয় হবে কত

২০
X