মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক, পাবনা
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অভাবী সংসারে হাল ধরা হলো না সাগরের

বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সাগরের পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। ছবি : কালবেলা
বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সাগরের পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। ছবি : কালবেলা

দিনমজুর বাবার অভাবী সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়েছিলেন সাগর হোসেন (২০)। ১০ তারিখে বেতন তুলে বাড়ি আসার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই আগুন কেড়ে নিল তার ও পরিবারের স্বপ্ন।

রাজধানীর বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে তার নামটিও।

নিহত সাগর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আলী ও সাবিনা খাতুন দম্পতির ছেলে। এ বছর এইচএসসি পাশ করেছেন তিনি।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাগর ছিলেন সকলের বড়। তার বাবা দিনমজুর এবং মা গৃহিণী।

ধানুয়াঘাটা গ্রামের বাসিন্দা ঢাকায় কর্মরত মনিরুল ইসলাম মনির জানান, গারদা শিলড সিকিউরিটি কোম্পানির মাধ্যমে সিকিউরিটি হিসেবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ক্লথিং ব্যান্ড ইপিলিয়ন শোরুমে জয়েন করেছিলেন ওই ভবনে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় আগুনে আটকা পড়ে মারা যান সাগর।

শুক্রবার (০১ মার্চ) বিকেলে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা। ছেলের জন্য আর্তনাদ করছেন তারা। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা। শোকে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের বাতাস।

সাগরের বাবা হাসান আলী বলেন, দিনমজুরি করে কোনো রকমে সংসার চালাই। ছেলেকে লেখাপড়া করানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। বাবা ছেলে আলোচনা করে কর্মের সন্ধানে তাকে ঢাকায় যেতে বলি। চার মাস আগে সে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে। সে মাঝেমধ্যে কিছু টাকা পাঠাত। তা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলছিল। গতরাতে ১টার দিকে জলসা শুনে বাড়ি ফেরার পর আমি শুনতে পাই আমার ছেলে নাই। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচব।

সাগরের মা সাবিনা খাতুন বলেন, দুদিন আগে ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। বেতন তুলে ১০ তারিখে বাড়ি আসবে বলেছিল সাগর। আমি বলেছিলাম যে টাকার দরকার নাই, তুমি বাড়ি চলে আসো। কিন্তু তার আগেই আমার ছেলেটা পৃথিবী থেকে চলে গেল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাগরের মা।

হাদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন বলেন, সাগর আমাকে দাদা বলে ডাকত। ঢাকা থেকে এসে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল সে। ঢাকা যাওয়ার আগেও আমার সঙ্গে কথা বলেছে সে। শুক্রবার সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানলাম বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় সাগর মারা গেছে। এটি একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তার পরিবারটি খুবই অসহায়। আমি এবং উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে এ অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। সেই সঙ্গে দাবি জানাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যেন পরিবারটি ক্ষতিপূরণ পায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চলন্ত ট্রেনে পপকর্ন বিক্রেতাকে হত্যা

আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড, গ্রেপ্তার ২৪

বস্তিবাসীর জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ও স্থায়ী পুনর্বাসনের আশ্বাস আমিনুল হকের

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে: সাকি

তিন মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারি গ্রেপ্তার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে : ডা. শাহাবুদ্দিন

‘যারা কাসেমীর ফাঁদে পড়েছ, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করো’

ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা বাংলাদেশের

বৃহত্তর নোয়াখালী নারী কল্যাণ সংঘ ইতালির আত্মপ্রকাশ

১০

শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের

১১

‘হাসিনার কালো আইন বাতিল করুন, না হয় নিবন্ধন দিন’

১২

বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

১৩

আহত শিশুকে নেওয়া হলো হাসপাতালে, সড়কে পড়ে ছিল বিচ্ছিন্ন হাত

১৪

বিএনপির দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১৫

যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের ২ সদস্য বরখাস্ত

১৬

দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রাণ গেল ২ বন্ধুর

১৭

লাভের আশায় কৃষকের আগাম ফুলকপি চাষ

১৮

বাউল শিল্পীদের মারধরের ঘটনায় মামলা

১৯

না ফেরার দেশে মেসিকে আর্জেন্টিনা দলে আনার মূল কারিগর

২০
X