কালবেলা প্রতিবেদক, পাবনা
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অভাবী সংসারে হাল ধরা হলো না সাগরের

বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সাগরের পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। ছবি : কালবেলা
বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সাগরের পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। ছবি : কালবেলা

দিনমজুর বাবার অভাবী সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়েছিলেন সাগর হোসেন (২০)। ১০ তারিখে বেতন তুলে বাড়ি আসার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই আগুন কেড়ে নিল তার ও পরিবারের স্বপ্ন।

রাজধানীর বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে তার নামটিও।

নিহত সাগর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আলী ও সাবিনা খাতুন দম্পতির ছেলে। এ বছর এইচএসসি পাশ করেছেন তিনি।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাগর ছিলেন সকলের বড়। তার বাবা দিনমজুর এবং মা গৃহিণী।

ধানুয়াঘাটা গ্রামের বাসিন্দা ঢাকায় কর্মরত মনিরুল ইসলাম মনির জানান, গারদা শিলড সিকিউরিটি কোম্পানির মাধ্যমে সিকিউরিটি হিসেবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ক্লথিং ব্যান্ড ইপিলিয়ন শোরুমে জয়েন করেছিলেন ওই ভবনে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় আগুনে আটকা পড়ে মারা যান সাগর।

শুক্রবার (০১ মার্চ) বিকেলে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা। ছেলের জন্য আর্তনাদ করছেন তারা। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা। শোকে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের বাতাস।

সাগরের বাবা হাসান আলী বলেন, দিনমজুরি করে কোনো রকমে সংসার চালাই। ছেলেকে লেখাপড়া করানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। বাবা ছেলে আলোচনা করে কর্মের সন্ধানে তাকে ঢাকায় যেতে বলি। চার মাস আগে সে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে। সে মাঝেমধ্যে কিছু টাকা পাঠাত। তা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলছিল। গতরাতে ১টার দিকে জলসা শুনে বাড়ি ফেরার পর আমি শুনতে পাই আমার ছেলে নাই। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচব।

সাগরের মা সাবিনা খাতুন বলেন, দুদিন আগে ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। বেতন তুলে ১০ তারিখে বাড়ি আসবে বলেছিল সাগর। আমি বলেছিলাম যে টাকার দরকার নাই, তুমি বাড়ি চলে আসো। কিন্তু তার আগেই আমার ছেলেটা পৃথিবী থেকে চলে গেল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাগরের মা।

হাদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন বলেন, সাগর আমাকে দাদা বলে ডাকত। ঢাকা থেকে এসে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল সে। ঢাকা যাওয়ার আগেও আমার সঙ্গে কথা বলেছে সে। শুক্রবার সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানলাম বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় সাগর মারা গেছে। এটি একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তার পরিবারটি খুবই অসহায়। আমি এবং উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে এ অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। সেই সঙ্গে দাবি জানাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যেন পরিবারটি ক্ষতিপূরণ পায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব: নীরব

‘হামজা আমার দলে হলে বেঞ্চেই বসে থাকত’

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

আফগানদের কাছে হারার পর যা বললেন মিরাজ

অল্প পুঁজি নিয়ে আফগানদের সাথে পারল না বাংলাদেশ

‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে’

রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময়

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯ কোটি ডলার

৭ বছর পর শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করলেন খালেদা জিয়া

১০

ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ

১১

কালবেলার সংবাদের পর স্বপ্নের রঙিন ঘরে শাহারবানু

১২

আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াত : মুজিবুর রহমান

১৩

রাজধানীতে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারের রেকর্ডেড ভিডিও প্রদর্শন

১৪

জবাব দিতে পিএসসিকে আলটিমেটাম

১৫

অসদাচরণের অভিযোগে বদলি চিকিৎসক দম্পতি

১৬

সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ

১৭

শহীদ জিয়ার মাজারে দোয়া করলেন খালেদা জিয়া

১৮

নোয়াখালী বিভাগ চাইলেন ‘কাবিলা’

১৯

বেথ মুনির রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত জয়

২০
X