সরকার নির্ধারিত মূল্যে গরুর মাংস বিক্রিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ীরা। প্রতিবাদে সকল মাংসের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। দাম পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন মাংস ক্রেতারা।
সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে শহরের আনন্দবাজার, ফারুকি বাজার, মেড্ডা বাজারসহ জেলা শহরের অন্তত অর্ধশতাধিক দোকানে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রাখা হয়।
সরেজমিনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে সরকারের পক্ষ থেকে গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, খামার বা ব্যাপারিদের কাছ থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস চামড়াসহ ৭২০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।
খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বিক্রয় করে ৭৫০ টাকা। কম দামে মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয় তাই ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে জেলা শহরের বাজারগুলোতে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
মাংস ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা জনগণের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করেই মাংস বিক্রি করে থাকি। সরকার আমাদের যে বাজার দর দিয়েছে এ দামে মাংস বিক্রি করলে লোকসান হবে। তাই আমরা গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমাদের মাংস বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আরেক মাংস ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া বলেন, আমরা লোকসানে ব্যবসা করতে পারব না। সরকার গরুর মাংসের যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে দরে মাংস বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হবে। লোকসান দিয়ে তো আর ব্যবসা সম্ভব না। তাই সকাল থেকে আমরা মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ীরা খামারি এবং ব্যাপারি থেকে গরু সংগ্রহ করে থাকে। তারা চামড়াসহ আস্ত গরু ক্রয় করে বাজারে জবাই করে থাকেন। এতে ৭২০ টাকা প্রতি কেজিতে দাম পড়ে। সরকার ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাজারের ক্ষেত্রে এ দাম প্রযোজ্য হবে না। অবশ্যই দাম সমন্বয় করতে হবে। দাম পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে। অন্যথায় এই মাংসের বাজার বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।
ফারুকী বাজারে আসা ক্রেতা মো. রবিউল্লা বলেন, সকালে গরুর মাংস কিনতে এসে দেখি দোকান বন্ধ। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গরুর মাংস কিনতে না পেরে ফার্মের মুরগি নিয়ে বাসায় যাচ্ছি। রমজান মাসে এমনটা প্রত্যাশা করিনি। আশা করি ব্যবসায়ীরা দ্রুত তাদের সমস্যার সমাধান করে দোকান চালু করবে।
ফারুকী বাজারে লিফলেট বিতরণকালে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মচারী মো. পলাশ মন্ডল বলেন, মহাপরিচালকের কার্যালয়ের নির্দেশনায় বাজারে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এর বেশি আমার জানা নেই।
মন্তব্য করুন