ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। আর এ আনন্দ ও খুশি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় নতুন পোশাক। তাই তো ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসে, মার্কেটের পাশাপাশি মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে দর্জিদের দুয়ারেও। এবারের ঈদুল ফিতর ঘিরেও এর ব্যতয় ঘটেনি। আর এই ঈদকে সামনে রেখে নতুন নতুন পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দর্জি কারিগররা। রোজার আগে থেকেই অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। আরও কিছুদিন অর্ডার নেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন উপজেলার টেইলার্স মালিকরা।
ঈদকে সামনে রেখে এখন সেলাই মেশিনের শব্দে মুখর দর্জির দোকানগুলো। বাহারি নকশার কাপড় বানাতে সেখানে ভিড় করছেন অনেকেই। উপজেলার দর্জি কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই এখন। অবশ্য ব্যস্ততা শুরু হয়েছে রোজার আগে থেকেই।
সরেজমিনে শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারের দর্জি দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ছোটবড় প্রতিটি দোকানেই সেলাই কাজের প্রচুর অর্ডার পাচ্ছেন কারিগররা। প্রত্যেক কারিগর দিনে তৈরি করছে প্রকার ভেদে ৬ থেকে ৮টি অর্ডার করা পোশাক। সামনে ঈদ তাই রুজি-রোজগারের একমাত্র সম্বলটি যেন একমুহূর্তের জন্যও বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। নতুন করে অর্ডার এখনো চলছে বলে জানা গেছে। চাহিদামতো নতুন পোশাক পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। পছন্দমতো পোশাক বানাতে ক্রেতারা ছুটছেন টেইলার্সগুলোতে।
কেন্দুয়া বাজারের টেইলার্স সুজন ও খোকনসহ কয়েকজন মালিক বলছেন, পছন্দের পোশাকের জন্য রেডিমেড থ্রিপিস ও থানকাপড় কিনে ক্রেতারা পাড়ি জমাচ্ছেন দর্জি দোকানগুলোতে। ক্রেতাদের পছন্দ মতো পোশাক বানাতে দিনরাত দোকান খোলা রেখে কাজ করছেন দর্জিরাও। আবার কোনো কোনো টেইলার্স কাজের চাপ সামলাতে মৌসুমি কারিগর এনেছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কেন্দুয়া বাজার, সান্দিকোনা বাজার,নওপাড়া বাজার, রামপুর বাজার ও চিরাং বাজারে বিভিন্ন টেইলার্সের কারিগরদের এক মুহূর্তের জন্য অবসর নেই। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লার টেইলার্সও চলছে সমান তালে। দিনরাত নতুন নতুন পোশাক বানাচ্ছেন তারা।
উপজেলার কেন্দুয়া বাজারের খোকন টেইলার্সের মালিক খোকন দাস বলেন, ঈদকে সামনে রেখে তাদের ব্যস্ততা খুব বেড়েছে। শবেবরাতের পর থেকে ক্রেতারা ঈদের পোশাকের অর্ডার দিচ্ছেন। ১৫ রমজানের পর তাদের পক্ষে আর অর্ডার নেওয়া সম্ভব হবে না। ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরই টেইলার্স মালিকরা নতুন কারিগর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ইতোমধ্যে অধিকাংশ টেইলার্সই নতুন কারিগর নিয়োগ দিয়েছেন
উপজেলার কেন্দুয়া বাজারের টেইলার্স মালিক সুজন রায় বলেন, ছেলেদের প্যান্ট-শার্টের অর্ডার টেইলার্সগুলো এখনো নিচ্ছে। মেয়েদের জামা বানানোর মজুরি নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সিল্ক জর্জেট, কাতান, লেলিন, বেনারসি কাপড়ের মজুরি কিছুটা বেশি। এক সেট থ্রিপিস বানাতে মজুরি লাগছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। শার্ট বানাতে মজুরি লাগছে ২০০-৩০০ টাকা, প্যান্ট বানাতে মজুরি লাগছে ৪০০-৫০০ টাকা। বিভিন্ন মার্কেট ও স্থান ভেদে এসব মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজারে নতুন পোশাক অর্ডার দিতে টেইলার্সের কাছে আসা পলি আক্তারসহ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, আর কিছুদিন পর আমাদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাকের অর্ডার দিতে বাজারে আসছি। কিন্তু পোশাকের মজুরির যে দাম আমরা তাতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা যারা নিম্নআয়ের মানুষ আছি তাদের জন্য খুবই সমস্যা। পোশাকের দাম ও মজুরির দাম বাড়লেও আমাদের তো আর আয় বাড়েনি।
মন্তব্য করুন