খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সারারাত রসুনক্ষেত পাহারায় কৃষক, শিয়ালের কামড়ে আহত ১০

অস্থায়ী ঘর তৈরি করে চুরি ঠেকাতে রাত জেগে রসুনক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। ছবি : কালবেলা
অস্থায়ী ঘর তৈরি করে চুরি ঠেকাতে রাত জেগে রসুনক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। ছবি : কালবেলা

সাদা সোনা খ্যাত রসুন চাষে স্বপ্ন পূরণের আশায় দিন গুনছেন উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার রসুন চাষিরা। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় রসুনের ফলন ভালো হয়েছে। তবে ক্ষেতের রসুন চুরি হওয়ায় আশঙ্কায় রাত জেগে নিজেদের উৎপাদিত রসুনক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন তারা। রাতে পাহারা দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১০ জন কৃষক শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১৬২০ হেক্টর। যা গতবছরে ছিল ১৫০০ হেক্টর। কৃষি বিভাগের পরামর্শে রসুনের আবাদ বৃদ্ধি হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে উপজেলার কাচিনীয়া, হাসিমপুর, গোয়ালডিহি ও নলবাড়ী গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, রসুনক্ষেতের পাশে পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে কৃষকরা সেখানে করছেন রাত্রিযাপন। চোখে ঘুম নেই তাদের, রাত জেগে টর্চ লাইটের আলোয় রসুন ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন তারা। কিন্তু বর্তমান সময়ে শিয়ালের উপদ্রপ হওয়ায় তারা আছেন মহা আতঙ্কে। ঈদুল ফিতরের আগেই রসুন ঘরে তোলার কাজ শেষ হবে বলে জানান কৃষকরা।

গোয়ালডিহি জমির শাহপাড়ার রসুন চাষি রিশাদ শাহ কালবেলাকে বলেন, ৫০ শতকের প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এ বছর খরচ হয় প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা একটু বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫-৭০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজারমূল্য ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সে হিসেবে অন্য আবাদের চেয়ে রসুন চাষ লাভবান বলে তিনি জানান।

গোয়ালডিহি গ্রামের রসুন চাষি আশরাফ আলী কালবেলাকে জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রসুন চাষে খরচ ও শ্রম বেড়েছে। কিন্তু এত কষ্টে আবাদ করেও চোরের চিন্তায় রাত জাগতে হয়। কেননা রসুন খুবই দামি ফসল তাই পাহারা দিচ্ছি।

মনির জীবন নামে এক যুবক তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমাদের গ্রামে ৩ জনসহ আশেপাশের গ্রামে ১০ জন কৃষককে শিয়াল কামড়ানোর খবর শুনলাম। অর্ধেক নাক ছিঁড়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এক দিকে রাতের আঁধারে জমির ফসল চুরি অন্যদিকে দিনে দুপুরে শিয়ালের উৎপাত। কৃষক যেন কোনো কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না এখন।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার কালবেলাকে বলেন, আবহাওয়া ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে ভালো ফলন ও বর্তমান বাজারে রসুনের দাম বেশি পাওয়ার মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন। চুরি রোধে কৃষকরা দিনে ও রাতে পাহারা দিচ্ছে শুনেছি। শিয়ালের কামড়ের বিষয়টি স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি।

এ বিষয়ে থানা ওসি মোজাহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন- থানা পুলিশ, গ্রাম পুলিশ ও রাত্রিকালীন পাহারাদাররা চুরি রোধে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এদের সঙ্গে জনগণের সচেতন ভূমিকা চুরি রোধ ও অপরাধ কমাতে অনেক কার্যকর হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুষ্টিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের অফিসে আগুন

হাসপাতালের উদ্দেশে খালেদা জিয়া

খামেনিকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র, অভিযোগ দুই দেশের বিরুদ্ধে

ইন্টারপোল সম্মেলনে যোগ দিতে মরক্কো গেলেন আইজিপি

টেস্ট জয়ের পরও বাংলাদেশের সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

বঙ্গোপসাগরে ১৩ জেলে নিখোঁজ

হাসিনা-কামালকে ফেরাতে দিল্লিকে ঢাকার চিঠি

শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরতে বিভাগীয় শহরে বাস সুবিধা দিচ্ছে জবি প্রশাসন

চমক রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা বাংলাদেশের

পায়ে শিকল বাঁধা বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

১০

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া

১১

পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা তরুণীসহ আটক ২

১২

এক সপ্তাহ রাতে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখুন

১৩

যে ৮ লক্ষণে বুঝবেন তিনি এখনো আপনাকে ভুলতে পারেননি

১৪

ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন তারেক রহমান

১৫

ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসকসহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা

১৬

সেমিতে হেরে বিশ্বকাপে তৃতীয় বাংলাদেশ

১৭

কোপেনহেগেনে ফুসফুস স্বাস্থ্য সম্মেলনে বাংলাদেশি ২ বিশেষজ্ঞ

১৮

আগুনে পুড়ে ছাই আড়াই হাজার মুরগির বাচ্চা

১৯

কলেজে শিক্ষার্থীদের টিকটক ভিডিও, মোবাইল নিষিদ্ধ করল কর্তৃপক্ষ

২০
X