রমজানে ক্রেতার পকেট ঝারছের বিক্রেতারা। ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার দরে ক্রেতার পকেট ঝেরে নিজেদের পকেট গরম করছেন বিক্রেতারা। রমজান এলেই বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। মাছ-মাংস ও ফলসহ বাড়ছে অন্য সব পণ্যের দাম। রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে অস্বস্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষজন। ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে অথচ প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। ক্রেতাদের সাধ্যের নাগলে নেই নিত্যপণ্যের দাম। রোজায় বাজার গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি ডলার সংকট ও আমদানি শুল্কের কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাংসের বাজারে যেন লেগেছে আগুন। হাতীবান্ধায় মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে একটি চক্র। রমজানে চাহিদা দেখা দিলেই তারা বাজারে মাংসের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি করছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, বয়লার মুরগি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, পোলট্রি মুরগি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
এদিকে ফলের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রমজান মাসে রোজাদারদের ইফতারে তালিকায় অন্যতম খাবার হচ্ছে ফল। সেই ফলের দাম শুনে নুয়ে পরার মতো অবস্থা ক্রেতাদের। প্রতিটি ফলের দাম দিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতারা জানান, রমজানে সব ধরনের ফলের দাম দিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর খেজুরের দাম শুনে হাসফাঁস করছেন সাধারণ মানুষ। রমজানে সাধারণ মানুষের ভাগ্যে এ বছর খেজুর জুটছে না বলে জানান ক্রেতারা। তবে কাঁচাবাজারে সবজির দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে থাকলেও শসা, লেবু ও আলুর দাম বেড়েছে।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর রমজানে কাঁচামালের আমন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। চাল, ডাল, মাছ মাংসের দাম বেশ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলেন মোকামে বেশি দামে কিনতে হয়। তাই দাম বেড়েছে। ডলার সংকট ও আমদানি শুল্কের কারণে ফলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তারা।
রমজানে চাল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। চাল ২৫ কেজি বস্তা প্রতি প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আটাশ ২৫ কেজি বস্তা ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকা, স্বর্ণা বস্তা প্রতি ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকা, কাটারিভোগ বস্তা প্রতি ২০০০ থেকে ২০৫০ টাকা, চিনিগুঁরা বস্তা প্রতি ২০০০ থেকে ২১০০ টাকা। মসুর ডাল প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা, ছোলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা, বেসন ৯০ থেকে ১০০ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, সয়াবিন তেল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
বাজারে আসা ক্রেতা আনিছুর রহমান বলেন, শীতকালীন শাক-সবজি এ বছর বেশি আমন হওয়ায় কাঁচা বাজারে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। তবে চাল, ডাল, মাছ ও মাংসসহ অন্যান্য জিনিসের দাম অনেক বেশি। আর রমজানে ফলমূল খাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সাধ্য নেই।
এ বিষয়ে বাজারে আসা দিনমজুর মোকলেছুর জানান, মানুষের বাড়িতে দিনমজুর করে বাজারে মাছ মাংস কেনার মতো সাধ্য নেই। রোজায় ছেলে-মেয়েদের একটু ভালো খাবার দাবার খাওয়াবো তা আর পারছি না। মাছ-মাংসের যে দাম, ক্যামনে নেব! তাই এবার রমজানে কষ্টে দিন পার করছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত হাটবাজার পরিদর্শন করছে। কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দাম নিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা করা হবে।
মন্তব্য করুন