এপ্রিলের শুরুতেই রাজশাহীতে যেন ঝরছে আগুন। সোমবার (১ এপ্রিল) রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য বছর আবহাওয়ার কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা গেলেও এবার এপ্রিলের শুরুতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী শহর। গরম বাতাস যেন শরীরে বিঁধছে আগুনের লেলিহান শিখার মত।
সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তাই এ বছর মৌসুমের প্রথমেই মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে। এতেই শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস অবস্থা।
বিশেষ করে রমজানের রোজাদারদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। তাপপ্রবাহের কারণে আজ দুপুরের পর প্রধান প্রধান সড়ক ফাঁকা হয়ে যায়। অনেক মানুষকে ক্লান্ত শরীরে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে দেখা যায়। অনেকে আবার চোখেমুখে ঠান্ডা পানি দিতে দেখা যায়। তবে রিকশা চালকদের তীব্র রোদ উপেক্ষা করেই রিকশা চালাতে দেখা গেছে। এছাড়া তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া অন্য পেশার মানুষেরাও।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) রহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে রোববার (৩১ মার্চ) সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এটিও ছিল দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে সর্বশেষ শনিবার দিনগত রাতে ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তখন তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রিতে নেমে এসেছিল। এরপর থেকে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। রোববার দুপুরের পর বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। ফলে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, গেল দুদিন থেকে রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা কয়েকদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এছাড়া আরও অন্তত ৫ দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে এবং তাই আগামী কয়েক দিন রাজশাহী মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের মধ্য দিয়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা নেই। তবে কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান।
মন্তব্য করুন