ঈদযাত্রায় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। উৎসবের আমেজে উৎফুল্ল মেজাজে স্বস্তিতেই নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
১৯২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ১৩ দশমিক ৩ কিমি এ মহাসড়কে কাঁচপুর, মদনপুর, মোগরাপাড়া ও মেঘনা ব্রিজের অংশটুকু মেঘনা টোলপ্লাজার ওপর ভিত্তি হয়ে আছে। এদিকে টোলপ্লাজায় ৬টি কাউন্টারে সঙ্গে নতুন আরও ৬টি টোল কাউন্টার সংযুক্ত করায় মোট ১২টি কাউন্টার দিয়ে নির্বিগ্নে যানজটবিহীন নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে পারছেন যাত্রীরা।
তবে সোমবার (৮ এপ্রিল) সব পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাত থেকেই মহাসড়কে যাত্রীদের ঢল নামে। যানবাহন পেতে যাত্রীদের কোনো দুর্ভোগের শিকার হতে না হলেও কিছুসংখ্যক যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন।
মেঘনাঘাট টোলপ্লাজার কার্যনির্বাহী অফিসার আব্দুল আলিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে মেঘনা টোলপ্লাজায় ১২টি কাউন্টার চালু আছে। ঈদযাত্রায় যেন যাত্রীরা সহজেই তাদের গন্তব্যস্থলে যেতে পারে সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দেওয়া হচ্ছে। এবার যানজটের আশঙ্কা নেই। আশা করায় স্বস্তিতেই ফিরবে সাধারণ মানুষ।
আলী মিয়া নামের এক যাত্রী বলেন, অন্যান্য বছর মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে গেলেই মেঘনা টোলপ্লাজা থেকে যানজট মোগরাপাড়া এলাকা ছাড়িয়ে কেওডালা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এ ছাড়াও মেঘনা সেতুতে টোল আদায়ে বিলম্ব এবং মহাসড়কের যেখানে সেখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা হতো। এবার একদম তার উল্টো, হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতায় কোনো যানবাহনকে অতিরিক্ত সময়ের জন্য বাসস্ট্যান্ডে থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
কুদরত সরকার নামের আরেক এক যাত্রী জানান, গতবারের চেয়ে এবার মহাসড়কের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো রয়েছে। দুর্ভোগ এড়াতে গত সপ্তাহেই পরিবারকে পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে বেশি ভাড়া আদায় করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নজরদারি করলে আমরা উপকৃত হতাম।
মেঘনা টোলপ্লাজায় আটকে থাকা ফেনীগামী বাস ড্রাইভার সবুজ মিয়া জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার যানজট নেই বললেই চলে। সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ যে রাস্তাঘাট এত উন্নত করেছে। একই প্রশাসনও যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। বাসের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, যাত্রীর চাপ থাকায় বাস পেতেও সমস্যা হচ্ছে বাস মালিকদের তাই অন্যসময়ের চেয়ে একটু বেশিই নেওয়া হচ্ছে। তবে পরিবার নিয়ে যে তারা স্বস্তিতে ঈদ করতে পারবে এটাই মুখ্য বিষয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি রেজাউল হক বলেন, গতবারের চেয়ে এবার মহাসড়কে আরও বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকার পাশাপাশি মোবাইল টিম, হোন্ডা টিম, অ্যাম্বুলেন্স টিম রয়েছে। এ ছাড়া মহাসড়কে যে কোনো যানবাহন বিকল হয়ে গেলে কিংবা কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত সরানোর জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় এবং মদনপুর অংশে দুটি রেকার রাখা হবে বলে জানান তিনি। তবে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তা তদারকি করছি।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কোনো সংস্কার কাজ চলমান না থাকায় যাত্রীরা সহজেই তাদের গন্তব্যস্থলে যেতে পারবে। আমরা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারেন।
মন্তব্য করুন