মো. ফরহাদ হোসেন, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৭ এএম
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বোরোর বাম্পার ফলনে খুলনায় কৃষকের মুখে হাসি

বোরো ক্ষেতে মহারাজপুর গ্রামের কিষানি নাসরীন খাতুন। ছবি : কালবেলা
বোরো ক্ষেতে মহারাজপুর গ্রামের কিষানি নাসরীন খাতুন। ছবি : কালবেলা

দেশের দুর্যোগপ্রবণ এলাকা বলে পরিচিত খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎসব আর আনন্দের মধ্য দিয়ে চলছে ধান কেটে ঘরে তোল। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ফলন ভালো হওয়ায় বেশ খুশি কয়রার কৃষকরা।

কয়রা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কয়রার ৭টি ইউনিয়নে ৫৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।

তবে কৃষকরা বলছেন, অনেকের কাছ থেকে ধারদেনা করে বোরা ধান চাষ করি। এ বছর বেশি দামে সার-ডিজেল কেনা ও সেচসহ ধান চাষে এবার অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে তাদের। তারপরেও ধান চাষ করে লাভবান হবে চাষিরা এমনই মন্তব্য কৃষকদের।

সরেজমিনে ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সোনালি ধানে দুলছে ফসলের মাঠ। অনেকে ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছে। আবার অনেকেই ধান কাটা শেষে মাড়াই করছে। যাদের জমির ধান এখনো কাটেনি তাদের প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় ঝুলছে ধান। আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন। তবে অনেক এলাকায় পানির জোগান না দিতে পারায় অনেকের রোপা বোরা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আগামীতে পানির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট।

মহারাজপুর ইউনিয়নে এবার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরা ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড রুপালি-৭, ব্রিধান-৬৭ ও বিনা-১০ চাষ করে কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছে।

মহারাজপুর গ্রামের কিষানি নাসরীন খাতুন বলেন, এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সারের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ডিজেলসহ অন্য সামগ্রীর দাম বেশি ছিল। এমনকি ধান রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বেশি। ধান কাটতে একজন শ্রমিককে ৬০০-৭০০ টাকা মজুরি দিতে হয় কিন্তু প্রচণ্ড গরমে বেশি টাকা দিয়েও মুজরি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ধান চাষ করতে যে টাকা খরচ হয়, তা ওঠানো খুব দুরূহ ব্যাপার। তার প্রতি বিঘা জমিতে রুপালি চাষ করে ৩০ মণ পর্যন্ত ধান উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। সে জন্য তিনি ধান চাষ করে লাভবান হবেন।

কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘চলতি মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। চারা রোপণে খরচ বেশি হয়েছে। শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে হয়েছে। সেইসঙ্গে সারও কিনতে হয়েছে বেশি দামে। তারপরেও এ বছর ১ বিঘা জমিতে ২৫ মণ ধান উৎপাদন করতে পেরেছে। উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. ফারুক হোসেন বলেন, বোরা ধান চাষাবাদে কৃষি অফিসের পক্ষ হতে কৃষকদের পাশে গিয়ে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বছর কয়রার ধান ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বছর কয়রার ৭টি ইউনিয়নে ৫৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। অধিকাংশ কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষ বেড়ে যাওয়ায় ফলন বেশি হয়েছে। আশা করি, আবহাওয়া ও বাজারদর অনুকূলে থাকলে কৃষকরা এবার লাভবান হবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাবির গ্রন্থাগারে ‘বিসিএস পড়ুয়াদের’ আনাগোনা বন্ধ হচ্ছে

বাগেরহাটে বজ্রপাতে দুই শ্রমিকের মৃত্যু

তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আ.লীগের মূল লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

দিনমজুরকে খুঁটিতে বেঁধে বেধড়ক পেটালেন আ.লীগ নেতা, ভিডিও ভাইরাল

পৃথিবীতে সৌরঝড়ের আঘাত, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শঙ্কা!

আইইবির ৬১তম কনভেনশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ইন্টারনেট খরচ বাঁচবে যেভাবে

বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে সংগীতশিল্পীসহ নিহত ২

নিজের প্রাণ দিয়ে শত জীবন বাঁচিয়ে গেলেন আসিম জাওয়াদ

বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত কিশোর

১০

মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ, এখনো ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর

১১

তিন বোনের ইচ্ছে...

১২

১২ বছর ধরে ভাঙা বেড়িবাঁধ

১৩

নড়াইলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১

১৪

দিনাজপুরে লরিচাপায় নিহত ২

১৫

আসিম জাওয়াদ, হার না মানা এক বীর

১৬

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় ৬০ জনের মৃত্যু

১৭

মাঠের মধ্যে ১৯ কোটি টাকার সেতু

১৮

বৃষ্টি ভেজা দিনটি কেমন যাবে আপনার?

১৯

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

২০
X