বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে বন্ধ রয়েছে সকল দূরপাল্লার গণপরিবহন। এতে যানবাহন শূন্য হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কর্মস্থলমুখী মানুষকে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বাস-মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের এক সভায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সদস্য সচিব মো. মুছা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) তিন শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ ৪ দফা দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট চলছে। অনেকে ধর্মঘটের বিষয়ে জানেন না।
রাস্তায় গিয়ে গাড়ি না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছে। ধর্মঘটের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ধুমঘাট ব্রিজ থেকে চট্টগ্রাম নগরীর প্রবেশমুখ সিটি গেট পর্যন্ত কোনো ধরনের গণপরিবহন চলাচল করছে না। মাঝে মধ্যে দু-একটি পণ্যবোঝাই গাড়ি চলাচল করলেও যা অন্যদিনের তুলনায় কম। বন্ধ রয়েছে মিরসরাইয়ের মহাসড়কে চলাচলকারী লেগুনা ও সেইফ লাইন পরিবহনের গাড়িও।
রোববার সকালে মিরসরাই পৌরসদরে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করা ব্যাংক কর্মকর্তা রাসেদুল ইসলাম বলেন, সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য রাস্তায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গণপরিবহনের দেখা পাচ্ছি না। আমি ভাটিয়ারি যাব। কীভাবে যাব জানি না।বড়তাকিয়া বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করা মঘাদিয়া এলাকার আবু নছর নামে একজন বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে আমার একটি জায়গাসংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। কিন্তু রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই। আমাকে যেভাবে হোক যেতে হবে।
এছাড়া আজ দীর্ঘ বন্ধের পর খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সময়মতো যেতে পারেনি। স্কুলশিক্ষক হামিদা আবেদীন জানান, প্রায় ১ মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে স্কুল খোলা। সকালে রাস্তায় এসে দেখছি কোনো বাস চলছে না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে সিএসজিচালিত অটোরিকশা করে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যেতে হয়েছে। যেখানে আমার ভাড়া লাগে ৪০ টাকা, এখন ভাড়া দিতে হয়েছে ২০০ টাকা।
সিএনজিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, মহাসড়কে ধর্মঘটের সবধরনের যাত্রীবাহী গাড়ি বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। যাত্রীদের কথা ভেবে মহাসড়কে গাড়ি চালাচ্ছি। তবে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে গাড়ি ভাড়া অন্যদিনের তুলনায় একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মো. মুছা বলেন, চুয়েটে দুই ছাত্রের মৃত্যুর পর বিষয়টি নিয়ে সমাধান হওয়ার পরও আমাদের গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে একাধিক গাড়ি। আমাদের সম্পদ ও পরিবহন শ্রমিকদের নিরাপত্তা চাই। আমরা চার দফা দাবি পেশ করেছি।
মন্তব্য করুন