প্রতিটি বাড়ি যেন একেকটি ‘ইটের খনি’। ইটের ভাটায় লাখ লাখ ইট থাকার কথা থাকলেও সেটি পাওয়া যাচ্ছে মানুষের ঘরবাড়িতে। শোয়ার ঘর থেকে শুরু করে রান্নাঘর, পুকুর, খড়কুটো যেখানেই হাত দেওয়া হয় সবখানেই ইট আর ইট। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, রাস্তা তৈরি করতে আনা এসব ইট পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়িতে।
একটি দুটি ইট নয়, প্রায় ১৭ হাজার ইট নিয়ে গেছে স্থানীয়রা। নির্মাণাধীন রাস্তার আশপাশের ঘরবাড়ি থেকে এত পরিমাণ ইট উদ্ধার করা হয়েছে। তবে যেসব বাড়িতে ইট পাওয়া গেছে তারা বলছেন, ছেলেরা খেলতে খেলতে এই ১৭ হাজার ইট বাড়িতে নিয়ে এসেছে।
বরগুনার পাথরঘাটায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের আওতায় সড়ক নির্মাণকাজ চলছে। ৮৪ লাখ টাকা খরচে নির্মাণ করা হচ্ছে ১ কিলোমিটার রাস্তা। এরইমধ্যে উপজেলার কালমেঘার পশ্চিম ঘুটাবাছা রাস্তার ৩৫০ মিটারের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ইট এনে রাস্তার পাশেই রাখে রাস্তার কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে ইটের সংকট দেখা দেওয়ায় সন্দেহ জাগে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে ইট খোঁজ করতে গেলে সন্ধান মেলে হারিয়ে যাওয়া ইটের। অনেকের ঘরের ভেতর, রান্নাঘরে, খড়কুটো এবং ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে প্রায় ১৭ হাজার ইট পাওয়া যায়। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, যাদের বাড়িতে এসব চুরি যাওয়া ইট পাওয়া গেছে তাদের দাবি, ইট কীভাবে এলো তা তারা জানেন না।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাঈম এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার ফিরোজ মিয়া জানান, কাজ করতে যে ইট প্রয়োজন তার চেয়েও প্রায় বিশ হাজার ইট বেশি আনা হয়েছে। এরপরও কাজ করতে গিয়ে ইট পাওয়া যাচ্ছে না।
রাস্তা নির্মাণের ইট চুরির ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কালমেঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম নাসির।
এদিকে ঠিকাদার অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুকুনুজ্জামান খান।
সরকারি ইট এভাবে চুরি করে বাড়ির আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রাখা ন্যক্কারজনক কাজর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সুশীল সমাজ।
মন্তব্য করুন