সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাদাই গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ৫ প্রিসাইডিং অফিসারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক মো. বিল্লাল হোসাইন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আব্দুল ওয়াদুদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারক তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. জুলহাজ উদ্দীন জানান, ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত জড়িত চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম জানা যায়নি।
তবে দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রাশেদ ইউসুফ জুয়েলের দাবি, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. রিয়াজ উদ্দিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য প্রিসাইডিং অফিসারদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ওই বৈঠকের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দাবি করেন তিনি।
সোমবার (৬ মে) দিনভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, পৌর এলাকার এস বি রেলওয়ে কলোনি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক আবু সামা, বাহুকা কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জ জোনাল অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসিন আরাফাত এবং এদের সমন্বয়ক শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলাম।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় নিজ কার্যালয়ের শহীদ শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, রোববার (৫ মে) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কাদাই এলাকার গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত কয়েকজন প্রিসাইডিং অফিসার একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য গোপন বৈঠক করছেন। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে কাউকে না পাওয়া গেলেও ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের থানায় নিয়ে আসা হয়।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গোপন বৈঠকের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। রিপোর্টের পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ১০ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে নতুন ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন