মিজানুর রহমান, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

চিকিৎসক ছেলের বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে মায়ের অভিযোগ

অভিযুক্ত সুজাউদৌল্লা। ছবি : কালবেলা
অভিযুক্ত সুজাউদৌল্লা। ছবি : কালবেলা

ছেলেকে ডাক্তার বানাতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়েছেন বাবা-মা। সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছেলে সুজাউদৌল্লা এখন গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। নিজের রক্ত পানি করে চিকিৎসক বানানো সেই ছেলের কাছেই জায়গা হচ্ছে না বৃদ্ধ পিতা-মাতার।

ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো পিতা-মাতাকে বাড়ি থেকে বিতারিত করতে চালাচ্ছেন নির্যাতন। অবশেষে ভরণপোষণের দাবি জানিয়ে সোমবার (৬ মে) সকালে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মনিরা বেগম নামে এক মা। অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদৌল্লা বর্তমানে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছেন। সুজাউদৌল্লা পৌর সদরের আনন্দনগর মহল্লার খাইরুল ইসলামের ছেলে।

বৃদ্ধা মা মনিরা বেগম কালবেলাকে বলেন, উপজেলা পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লার মো. খাইরুল ইসলামের স্ত্রী মনিরা বেগম। ছেলে সুজাউদ্দৌলাকে ডাক্তারি পড়াতে সবটুকু জমি বিক্রি করে দেন এ দম্পতি। ছেলেকে ডাক্তার বানাতে অনেক কষ্ট করেছেন তারা। কখনো কষ্টের তাপ বুঝতে দেননি ছেলেকে। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। একমাত্র ছেলে হওয়ায় মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও লিখে দিয়েছেন ছেলের নামেই।

তিনি বলেন, ছেলে চিকিৎসক হলেও তাদের ভরণপোষণ দেন না। পেটের তাগিদে অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যান চালান তার স্বামী খাইরুল ইসলাম। যা আয় হয় তাতেই কোনোমতে দিনাতিপাত করেন তারা। এখন বাড়ি থেকে তাদের বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে নিয়মিত শারীরিক মানসিক নির্যাতন শুরু করেছেন। স্বামীকে নিয়ে কোথায় যাবেন এর প্রতিকার চেয়ে তিনি ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন।

খাইরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমার সহধর্মিণী অসুস্থ। অসুস্থ মাকে প্রায়ই গালাগাল করেন ছেলে। তিনি সেটা দেখে না দেখার ভান করতেন, বুঝতে দিতেন না কাউকে। অথচ যে মা কখনো নিজে না খেয়ে যাকে খাওয়াতে আজ আমার সেই সন্তান বড় ডাক্তার হয়ে মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছেন। গায়ে হাত তুলছেন। তাই ছেলের নামে লিখে দেওয়া ভিটেমাটিও ফেরত চান তিনি।

অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদ্দৌলা বলেন, পিতামাতা তাকে ডাক্তারি পড়ার খরচ দেননি। তাছাড়া বাবা-মা হওয়ার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলেছেন খাইরুল-মনিরা দম্পতি। তারপরও তিনি ভরণপোষণ দিতে চাইলে তারা কাছে আসেন না।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পিতামাতার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে সতর্ক করেছেন তিনি। কিন্তু তিনি কোনো কথাই শুনছেন না।

চিকিৎসক সুজাউদৌল্লার বিরুদ্ধে মায়ের দায়ের করা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার কালবেলাকে মোবাইল ফোনে বলেন, এরইমধ্যে চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলম, সম্পাদক প্রকৌশলী চুন্নু

১০

নানা আয়োজনে গাকৃবিতে মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন

১১

বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যুতে সতর্ক অবস্থানে তামিম

১২

রাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু বুধবার

১৩

এবার সিলেটের উৎমাছড়া থেকে ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ

১৪

জমি রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়েরের শেষ সময় সেপ্টেম্বরে

১৫

পায়ের ফাঁকে বালিশ দিয়ে ঘুমালে কী হয়, জানেন কি?

১৬

জামায়াতের মুখে সংস্কার, হাস্যকর বিষয় : সোহেল

১৭

লবণ বেশি খেলে কী ঘটে শরীরে? জানালেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ

১৮

গণতন্ত্রকামী দলগুলোর দূরত্ব তৈরি হলে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে : তারেক রহমান

১৯

বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার

২০
X