ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মাঠে-মাঠে এখন পাকা ধান। তবে শ্রমিক সংকটে সময় মতো ধান কাটাতে পারছেন না কৃষকরা। এক মণ ধানের দামেও মিলছে না একজন শ্রমিক। শ্রমিক মিললেও জনপ্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা। সঙ্গে দুই বেলা খাবার। এতে শুধু ধান কাটতেই প্রতি মণ ধানের জন্য খরচ পড়ছে দেড় হাজার টাকার মতো। এদিকে বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮২০-৮৫০ টাকা। উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় একই চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ৩ হাজার ৩২৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড়ে ৫ থেকে সাত টন করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এ বছর শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি থাকায় কৃষকরা অনেকে নিজেরা ধান কাটার কাজ করছেন। প্রতিটি এলাকায় কমবেশি বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সত্যনগর গ্রামের কৃষক আবদুল খালেক, নিজ কালিকাপুর গ্রামের মো. হাসান জানান, তিনি এবার আড়াইশ শতক জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। চলতি বোরো মৌসুমে ঝড়, শিলাবৃষ্টি, পোকামাকড়, রোগবালাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকলেও ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু বাজারে ধানের চাহিদা ও বাজারমূল্য অনেক কম থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আবদুল খালেক আরও বলেন, ধান কাটা, জমি চাষ, সেচ, চারা, সার, কীটনাশকসহ অন্যন্য খরচ মিলিয়ে প্রতি মণ ধানের জন্য খরচ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানান, বোরো ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের ভালোভাবে ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। কয়েক দিন পরে সরকারি উদ্যোগে ধান ক্রয় শুরু হলে বাজারে ধানের দাম বেড়ে যাবে তাই কৃষকরা যেহেতু ঝড়বৃষ্টি নেই ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখলে পরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে শ্রমিকের দাম বেশি। কিন্তু তার বিপরীতে ধানের বাজার দাম কম হওয়ায় কৃষকরা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, পরশুরামে বিভিন্ন এলাকায় কম্ভাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ থাকবে কম্ভাইন্ড হারভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে ধান কাটলে কৃষকদের খরচ বাঁচবে।
মন্তব্য করুন