পটুয়াখালীর বাউফলে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৯টি ব্রিজের মধ্যে ৬টি ব্রিজে সংযোগ সড়ক না করে বিল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন ৫ ইউনিয়নের দেড় লাখেরও বেশি জনসাধারণ।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন প্রভাব খাঁটিয়ে ৪ বছরেরও অধিক সময় ধরে কাজগুলো ফেলে রেখেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে এলজিইডির আওতায় ৯টি আরসিসি গার্ডার ব্রিজের কাজ শুরু করে ‘মেসার্স সেলি এন্টারপ্রাইজ’ নামের পটুয়াখালীভিত্তিক একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক পটুয়াখালী জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন। ১৭ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩.৭ মিটার প্রস্থের ব্রিজগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের কালামিয়ার বাজার, একই ইউনিয়নের ফাঁসিকাটা ব্রিজ, দ্বিপাশা জোড়া ব্রিজ, কাছিপাড়া জয়বাংলা ব্রিজ, আয়লা ব্রিজ ও জিরোপয়েন্ট মোহাম্মাদ হাওলাদার খালের উপর নির্মিত ব্রিজসহ মোট ৯টি ব্রিজের কার্যাদেশ পায়।
কার্যাদেশ অনুসারে ২০২২ সালের ৯ এপ্রিল কাজ শেষ হওয়ার কথা। শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৩টি ব্রিজের কাজ শেষ করতে পারলেও বাকি ৬টি ব্রিজের অ্যাপ্রোচ ও সড়ক এখনো সম্পন্ন করতে পারেনি তারা। যে কারণে মূল সড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে ব্রিজগুলোর সঙ্গে। এমনকি গত প্রায় ৪ বছর ধরে কাজও হস্তান্তর করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
কোনো কোনো ব্রিজে স্থানীয়দের নিজস্ব অর্থায়নে কাঠের সিঁড়ি বা মাটির সরু রাস্তা তৈরি করে পায়ে হেঁটে চলতে পারলেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ৪ বছরের বেশি সময় ধরে ওই অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
অন্যদিকে জয়বাংলা বাজার-পাকঢাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংযোগ সড়কের মিয়ার খালের ওপর নির্মিত আ স ম ফিরোজ সাইকেল ব্রিজটির অ্যাপ্রোচ হয়নি। এর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স শম্পা কনস্ট্রাকশন (জেবি)। এটিও পটুয়াখালীভিত্তিক একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
এসব ব্রিজের বিল কী পরিমাণ উত্তোলন করা হয়েছে সে তথ্য দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট এলজিইডি কর্মকর্তারা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ এসব কাজের বিল উত্তোলন করা হয়েছে বহু আগে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেলি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কাজ শুরু করব। ২ বছর আগেও তো আপনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন দ্রুত কাজ শেষ করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এবার আর দেরি হবে না।
বাউফল উপজেলা প্রকৌশলী মো. মানিক হোসেন বলেন, আমরা তাকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি তার কাজ শেষ করবে।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. লতিফ হোসেন বলেন, আমরা ওই ঠিকাদারকে জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে কার্যাদেশ বাতিল করে লাইসেন্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন