ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪, ১১:০৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় ভুট্টা চাষিরা

জমি থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করছেন কৃষক। ছবি : কালবেলা
জমি থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করছেন কৃষক। ছবি : কালবেলা

গেল বছর ভুট্টার ভালো ফলনের সাথে দাম ভালো পেলেও এবার ফলন ও দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের কৃষক। অল্পসংখ্যক কৃষক মাড়াই শুরুর কয়েক দিন দাম ভালো পেলেও এখন দাম কমায় চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। এবার ফলন কমার সঙ্গে তেল, সার, কীটনাশক, সেচ ও জমির বর্গা খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে।ভুট্টার আবাদ বাড়াতে সরকার কিছু ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দিয়েছে।এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ১০০ টন।

এদিকে, কিছু কৃষকদের অভিযোগ, বিভিন্ন কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপনের কারণে না বুঝে ভেজাল বীজ ক্রয় করে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। আবার অনেকে ফলন কমের সঙ্গে বৈরী আবহাওয়ারকেও দুষছেন। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বেঁধে দেওয়া কম দামে ভুট্টা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। তাই সব মিলিয়ে ভালো দাম না পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি নেই।

পৌরশহরের নয়াপাড়ার এলাকার কৃষক জয়নাল বলেন, দুই ফসলি জমিতে ধান না দিয়ে এবার তিনি সাত বিঘা ভুট্টা চাষাবাদ করেছিলেন। যেখানে প্রতিবিঘা ৫০ থেকে ৫৫ মন ভুট্টা ফলন হওয়া কথা সেখানে তিনি পেয়েছেন ৪০ মণ। চাষাবাদ থেকে শুরু করে কাঁচা ভূট্টা বিক্রির আগ পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে তার ২৮-৩০ হাজার টাকা। কাঁচা ভূট্টা বাজারে বিক্রি করে চাষাবাদের খরচ উঠায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। গত মৌসুমে ভুট্টা জমি থেকে তুলেই ১ হাজার ৫০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। অথচ এবার ৮০০ টাকার বেশি কেউ নিচ্ছে না। তাই সরকারিভাবে ভুট্টা কেনার দাবি জানান তিনি।

উপজেলার আরেক ভূট্টা চাষি সাব্বির হোসেন জানান, এবার তিনি প্রায় ১৮ একর অর্থাৎ ৫৩ বিঘা জমিতে ভূট্টা চাষাবাদ করেছেন। তার মধ্যে ১৭ বিঘা এক ফসলি আর ৩৬ বিঘা দুই ফসলি। এক ফসলি জমিতে খরচ কম ফলন বেশি হয়েছে আর দুই ফসলি জমিতে খরচ বেশি ফলন কম হয়েছে। এদিকে লাগানো থেকে শুরু করে ভূট্টা উঠা পর্যন্ত ছয় মাস সময় লাগে, বিঘা প্রতি খরচ হয় ২৬ থেকে ৩০ হাজার টাকা। সেই তুলনায় এবার ভুট্টা দাম হতাশাজনক।

দাম কমের কারণ প্রসঙ্গ উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুজ্জামান জানান, ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। তারপরও দাম কমার অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে গত মৌসুমের ভুট্টা এখনও মহাজনদের কাছে মজুদ থাকায় নতুন ভুট্টা কেনায় মহাজনদের আগ্রহ কম। এটাও একটা বড় কারণ হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় সারাদেশে ফসল ও সবজি সংরক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধি করা। এ ছাড়া, উত্তরাঞ্চলের ভুট্টা চাষিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষের উচিত শুধু স্টোরেজ সুবিধা তৈরি করা নয়, কাছাকাছি ভুট্টা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রও স্থাপন করা। এর ফলে কৃষকরা শুধু তাদের উৎপাদিত ভুট্টা থেকে বেশি উপার্জনের সুযোগই পাবে না, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ খুব শিগগিরই ভুট্টা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নরসিংদীতে সাংবাদিকের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা, প্রাণনাশের হুমকি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলন নিয়ে এনসিপির বিশেষ বার্তা

পিবিপ্রবিতে গুচ্ছভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

ডিআইইউসাসের দিনব্যাপী সাংবাদিকতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন লাইনচ্যুত, ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম-সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ

শিক্ষার্থীদের জন্য পানির ফিল্টার দিলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

ঢাকা ছাড়াও আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলন হয়েছে যেসব জায়াগায়

পাক-ভারত উত্তেজনা : অতীতে কারা পেয়েছে সুবিধা, এবার সামনে কে?

আ.লীগ নিষিদ্ধে ৪ রোডম্যাপ দিলেন তুহিন মালিক

পোপ চতুর্দশ লিওকে অভিনন্দন বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের

১০

বড় পর্দায় দেখানো হচ্ছে হাসিনার গণহত্যা

১১

রাজধানীতে আপন দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার

১২

ইউটিউবে বাংলাদেশের ৪ টিভি চ্যানেল বন্ধ করল ভারত

১৩

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলন নিয়ে নতুন কর্মসূচি

১৪

‘এখন যদি খালেদা জিয়া শাহবাগে উপস্থিত হন’, পিনাকীর স্ট্যাটাস

১৫

উত্তেজনার মধ্যে বড় সুসংবাদ পেল পাকিস্তান

১৬

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধীদের ৪ জনকে পিটিয়ে আহত

১৭

হাফ ভাড়া নিয়ে তর্ক, কলেজছাত্রকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যা

১৮

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রামপুরা ব্লকেড

১৯

ইমরান খানের কারাগারে ড্রোন হামলা চালাতে পারেন মোদি

২০
X