কুমিল্লায় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে নূরজাহান বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূকে গরম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বুধবার (১৯ জুন) রাতে আদর্শ সদর উপজেলার শিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুই সন্তানের জননী নূরজাহান বেগমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নির্যাতিতার বাবা জয়নাল আবেদীন কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ নূরজাহানের ভাশুর আলী আশ্রাফ, দুই জা শাহীনুর বেগম ও লাইলি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে। পরবর্তীতে তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে স্বামীসহ অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্বামী খোরশেদ আলম ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন অনেক দিন ধরেই নূরজাহানকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছিল। এ নিয়ে বুধবার রাতে খোরশেদের সঙ্গে নূরজাহানের ঝগড়া হয়। এ সময় খোরশেদ, তার বড় ভাই ও দুই ভাবি মিলে নূরজাহানকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে। একপর্যায়ে তারা গরম খুন্তি দিয়ে নূরজাহানের শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন অংশে ছ্যাঁকা দেয়। গতকাল সকালে স্থানীয়রা গুরুতর আহত নূরজাহানকে কুমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। নূরজাহানের বাবা এ ঘটনায় খোরশেদ আলমসহ তার পরিবারের ছয়জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
নূরজাহানের বাবা জয়নাল আবেদীন বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি এর আগে কয়েকবার তাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করি। কিন্তু তারা সমাধান না মেনে আমার মেয়েকে নির্যাতন করল।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। তিন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। স্বামীসহ তিনজন পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন