উজ্জ্বল কুমার সরকার, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৪, ১০:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

চায়না দুয়ারি জালে অস্তিত্ব সংকটে দেশীয় প্রজাতির মাছ

মাছ ধরার ফাঁদ চায়না দুয়ারি জাল। ছবি : কালবেলা
মাছ ধরার ফাঁদ চায়না দুয়ারি জাল। ছবি : কালবেলা

দেশে শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। আর বর্ষাকাল মানেই পানিতে চারদিক থৈ থৈ। খালে-বিলে বর্ষার নতুন পানিতে দেখা মেলে দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের মাছ। এ বর্ষাতেও কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার খালে-বিলে তেমন দেখা মিলছে না দেশীয় প্রজাতির মাছের। বিপজ্জনক চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহারে খালে বিলে কমে যাচ্ছে এসব দেশীয় প্রজাতির মাছ।

জানা যায়, এ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকাই খালবিলের দখলে। বর্ষা হলেই এসব খাল-বিল পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। আর সেসময় নতুন পানিতে দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের মাছ ধরতো মৎস্য শিকারিরা।

গত ১০ বছর আগেও এ উপজেলায় মাছ ধরার জন্য দেশীয় ফাঁদ ব্যবহার করা হতো। ছাই, পলো, ঠেলা জাল, বরশি ইত্যাদি ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকারে গেলে এতে মাছের কমে যাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল না। কিন্তু বর্তমানে চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল মাছের বংশ বিস্তার নিঃশেষ করে দিচ্ছে।

গত কয়েক দিনে সরেজমিনে বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অসাধু শিকারিরা নিজেদের খাওয়া ও বিক্রয়ের জন্য কারেন্ট জাল এবং চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করছেন।

এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করা এক মৎস্য শিকারি জানান, এ জালে যে কোনো মাছের পাশাপাশি সাপ ও ব্যাঙের পাশাপাশি অন্যান্য জলজ প্রাণী ধরা দেয়। খালে-বিলে নতুন পানি আসলেই তারা এ জাল ব্যবহার করেন বলেও জানান।

সূত্র মতে, কয়েক দশক আগেও এ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় আড়াইশ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ ছিল। মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতায় এসব মাছের অনেক প্রজাতি এখন আর চোখে পড়ে না। বর্ষা মৌসুমে নদী, খাল, বিল থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে ব্যাপক হারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে দেশি মিঠা পানির মাছের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা মৎস্যজীবী লীগ নেতা মুসলেহ উদ্দিন মুসলিম জানান, গত ১০-১৫ বছর আগেও মাছ ধরার ছাই ব্যবহার করে ২-৩ ঘণ্টায় যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যেত তা দিয়ে দুবার তরকারি খাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে খালে বিলে মাছই নেই। কারেন্ট জাল ও চায়না জালে সব মাছ ধরা পড়ে যায়৷ ফলে মাছের বংশ বৃদ্ধিই হচ্ছে না।

দেশীয় প্রজাতির মাছের হারিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মমতাজ জিন্নাত সাগর বলেন, বিভিন্ন কারণেই দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে গেছে। এরমধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে মানুষের সচেতনতার অভাবও রয়েছে। হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছ রক্ষায় এখন ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন জানান, এ উপজেলায় গভীর খালবিলের সংখ্যা কম। এ ছাড়া শুকনো মৌসুমে এগুলোতে পানি না থাকা দেশি প্রজাতির মাছ কমে যাওয়ার একটি কারণ।

অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জালের ব্যাপারে নিয়মিতি অভিযান পরিচালনা করে এগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জিটিওকে সাক্ষাৎকার / বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী সহিংসতা নেই : ড. ইউনূস

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে জাতিসংঘ মহাসচিবের পূর্ণ সমর্থন

১৬ ফুটের এই দুর্গা প্রতিমা নজর কাড়ছে সবার

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ ৬ উপায়

মৃৎশিল্পে অবদানে সম্মাননা পেলেন ১২ শিল্পী

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

আজ ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ

কাতারকে ক্ষতিপূরণ দিতে ইচ্ছুক ইসরায়েল

সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরি দিচ্ছে ইউনাইটেড হাসপাতাল

১০

ঢাকায় কখন হতে পারে বজ্রবৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস

১১

৩০ সেপ্টেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১২

সেভেন রিংস সিমেন্টের ‘জেনে গড়ি, নিজের বাড়ি’ শীর্ষক সম্মেলন

১৩

ওসমানী হাসপাতালে ট্যাংকির ঢালাই ভেঙে কর্মী নিহত

১৪

জামিন পেলেন বাসদের সেই দুই নেতা

১৫

ঢাকা বিভাগেই থাকতে চান শরীয়তপুরবাসী

১৬

তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে সম্প্রীতির : সেলিমুজ্জামান

১৭

লালমনিরহাটে দুর্গাপূজার উদ্বোধন করলেন হাঙ্গেরি দূতাবাসের কনসাল 

১৮

চট্টগ্রামে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিশ্ব হার্ট দিবস উদযাপন

১৯

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে জামায়াত নেতা খুন

২০
X