উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের পর ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (দ্বিতীয় সংশোধিত) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে। এই সংশোধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এখন থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা অর্জন করেছে। এর ফলে, মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে দলীয়ভাবে বিচার ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পথ উন্মুক্ত হলো।
আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে রোববার (১১ মে) নতুন অধ্যাদেশটি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শনিবার (১০ মে) এই অধ্যাদেশটি প্রণয়ন ও জারি করেন।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো গত কয়েক দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে গতকাল শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। পরবর্তীতে সংশোধিত অধ্যাদেশে ‘সংগঠনের জন্য শাস্তি ইত্যাদি’ শিরোনামে নতুন ২০(বি) ধারা সংযোজন করা হয়।
২০(বি) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইন বা বর্তমানে প্রযোজ্য অন্য কোনো আইনের বিধান সত্ত্বেও, যদি ট্রাইব্যুনাল মনে করে যেকোনো সংগঠন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০২৫-এর ৩ ধারার উপধারা (২)-এর আওতাভুক্ত কোনো অপরাধ করেছে, এমন অপরাধ সংঘটনে নির্দেশ দিয়েছে, অংশগ্রহণ করেছে, সহায়তা বা উসকানি দিয়েছে, কিংবা ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছে- তাহলে ট্রাইব্যুনাল উক্ত সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করতে, তাকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে, তার নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করতে এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিতে পারবে।
সংশোধিত অধ্যাদেশে ‘সংগঠন’ শব্দের সংজ্ঞাও সংযোজন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘সংগঠন’ বলতে এমন কোনো রাজনৈতিক দল, ওই দলের অধীনস্থ, অনুমোদিত বা সংশ্লিষ্ট কোনো সত্ত্বা কিংবা এমন কোনো ব্যক্তির দলকে বোঝানো হবে, যারা ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় উক্ত দলের কার্যক্রম প্রচার, সমর্থন, অনুমোদন, সহায়তা বা সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রয়েছে।
মন্তব্য করুন