বিদেশে পাঠানোর নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূল হোতা জোসনা খাতুন ওরফে জোসনা সুলতানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জোসনাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মীর মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। এদিন আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
আসামির উদ্দেশে বিচারক বলেন, কিছু বলতে চান? জোসনা বলেন, আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্ডার পেয়ে আরেকটা কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করাই। যার মাধ্যমে কাজ করেছি, সে আমার ৪৪ লাখ টাকা না দিয়ে পালিয়ে গেছে। সে জাল ভিসা দিয়েছে। আমি সাইফুল (বাদী) সাহেবকে বলেছি, কিছু সময় দেন। আপনার টাকা পরিশোধ করব। কিন্তু উনি মামলা করে বসলেন। পরে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এরা একটা বড় প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করছে। পরে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আসামি জোসনা সুলতানা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। জোসনাসহ মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে একে অপরের সহযোগিতায় নিজেদের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি মর্মে প্রকাশ করে। একইসঙ্গে আসামিরা বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষকে ইউরোপের যে কোনো দেশে বৈধ ভিসা দিয়ে বিদেশে পাঠাতে পারবে বলে প্রচার করে আসছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মামলার বাদীর ছেলে ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলামকে জোসনাসহ তার সহযোগী এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা ইতালি পাঠাবার জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করে। আসামিদের বিভিন্ন প্ররোচনায় বাদী তার ছেলেকে ইতালি পাঠাতে রাজি হয় এবং গত ৯ মার্চ তাদের অফিসে হাজির হয়। সেখানে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে বাদী নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং ২১শ ইউরো আসামি জোসনা খাতুনকে প্রদান করেন। বাকি টাকা বাদীর ছেলেকে ইতালি পাঠানোর পর আসামিরা গ্রহণ করবে মর্মে মৌখিক অঙ্গীকার করে। টাকা গ্রহণের গ্যারান্টার হিসেবে আসামি জোসনা তার নামে বেসরকারি ব্যাংকের একটি ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর করে বাদীকে দেয়। আসামিরা টাকা নেওয়ার পর বাদীর ছেলেকে ইতালির একটি ভিসার স্টিকার সরবরাহ করেন। পরে আসামিদের কথামতো ও তাদের দেওয়া বিমান টিকিট নিয়ে বাদীর ছেলে গত ২২ এপ্রিল ইতালি যাওয়ার জন্য হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে গিয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা জানায় যে, বাদীর ছেলের ভিসাটি জাল।
পরে বাদী ও বাদীর ছেলে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আসামিরা ফোন বন্ধ করে দেয়। কিছুদিন পরে তাদের সঙ্গে বাদী ফোনে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললেও আসামিরা টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি করেন।
মন্তব্য করুন