বাংলাদেশের বাজারে নকল পণ্যের ছড়াছড়ি নতুন কিছু নয়। ওষুধ, প্রসাধনী থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী— সব কিছুর মধ্যেই ভেজালের ভয় ঢুকে গেছে। এবার সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েনি চালও। সম্প্রতি নানা জায়গায় প্লাস্টিকের চাল বা কৃত্রিম চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের ভেতর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
আমরা সবাই জানি, প্লাস্টিক একটি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, যা শুধু মানুষের নয়, প্রাণিকুলের জন্যও মারাত্মক। এই ভেজাল চাল খেলে শুধু হজমের সমস্যা বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি নয়, ক্যানসারের মতো ভয়ঙ্কর রোগ পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাই ভয়াবহ এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এফএসএসএআই) কয়েকটি সহজ পরীক্ষার পদ্ধতি জানিয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে ঘরে বসেই বোঝা সম্ভব চাল আসল নাকি নকল। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই পদ্ধতিগুলো—
আগুন দিয়ে পরীক্ষা
চাল ভেজাল বলে সন্দেহ হলে অল্প কিছু চাল একটি চামচে নিয়ে আগুনে ঢালুন। যদি চাল গলে প্লাস্টিকের মতো গন্ধ বের হয়, তাহলে বুঝবেন সেটি নকল। আর আসল চাল হলে এটি শুধু কালো হয়ে পুড়ে যাবে।
পানিতে পরীক্ষা
এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ চাল ঢালুন। যদি চালে কৃত্রিম রং মেশানো থাকে, তবে পানির রং বদলে যাবে। আবার পানিতে নাড়াচাড়া করলে প্লাস্টিকের চাল উপরে ভেসে থাকবে, কিন্তু আসল চাল কখনো ভেসে থাকবে না, সবসময় পানির নিচে ডুবে যাবে।
সরাসরি পরীক্ষা
চাল হাতে নিয়ে ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। যদি ছোট পাথর, ভাঙা দানা বা অস্বাভাবিক বিবর্ণতা দেখা যায়, তাহলে সেটি সন্দেহজনক। এ ধরনের চাল কেনা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।
চুন দিয়ে চেনার উপায়
একটি কাচের প্লেটে কিছু চাল নিয়ে তাতে সামান্য চুন ছিটিয়ে দিন। কিছুক্ষণ রেখে দেখুন চালের রং পরিবর্তন হয় কি না। যদি রং বদলায় বা রং উঠে যায়, তবে তা নকল চাল। আসল চালের ক্ষেত্রে কোনো রঙের পরিবর্তন হবে না।
রান্না করার পর
চালের ভেজাল ধরা পড়ার আরেকটি উপায় হলো রান্না করা। কিছু চাল রান্না করে তার গঠন দেখুন। যদি দানা অতিরিক্ত আঠাল হয় বা রাবারের মতো টানাটানি করে, তবে বুঝতে হবে এতে স্টার্চের পরিমাণ অস্বাভাবিক বা ভেজাল আছে।
সতর্কতা : খাদ্য মানুষের জীবনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই বাজার থেকে চাল কেনার সময় চোখ-কান খোলা রাখা জরুরি। সন্দেহজনক মনে হলে সেই চাল ব্যবহার না করাই ভালো।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইট রাইস ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন