গুলশান থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় নড়াইল-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তিসহ দুইজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
অপর আসামি হলেন, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি মোজাম্মল হক।
বুধবার (০১ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন ৬ দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে হাতে হ্যান্ডকাপ, মাথায় হেলমেট ও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে চারটার দিকে কাঠগড়ায় উঠানো হয়। আদালতে উঠানোর সময় মুক্তি ও মোজাম্মেলের পক্ষে অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মীদের দেখা যায়। তারা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই আব্দুস সালাম কারাগারে রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম ও সোহেল রানা উভয়ের পক্ষে জামিন শুনানি করেন। শুনানিতে তারা আদালতকে বলেন, আসামি ৪ বার এমপি হওয়ার পর সম্পদ কমেছে বাড়ে নাই। তিনি একজন জনপ্রিয় এমপি। তিনি স্বতন্ত্রভাবেও এমপি নির্বাচিত হন। নড়াইলে কোনো ছাত্র জনতার আন্দোলন হয় নাই। কোনো হত্যা হয় নাই। এলাকার কোনো হত্যা মামলায় তিনি আসামি নন। তাকে জামিন দিন। তাকে রিমান্ডে নিয়ে নাকি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। কী পাওয়া গেছে? কিছুই যায়নি। তার জামিন দিন।
পরে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর কাইয়ুম হোসেন নয়ন। শুনানিতে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২ হাজার ছাত্র-জনতা হত্যা করে শেখ হাসিনা পালিয়ে যায়। তার রাজনৈতিক ইতিহাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখবেন, তিনি সহিংসতায় জড়িত ছিলেন। শর্ট গান নিয়ে ছাত্র-জনতাকে গুলি করার মতো ভিডিও আমরা দেখেছি। আপনি ইউটিউবে সার্চ দেন। দেখেন তার কী সহিংস রাজনৈতিক কার্যাকলাপ রয়েছে। ১৭ বছর কী ধরনের নির্বাচন হয়েছে আপনারা দেখেছেন। আওয়ামী লীগের লোক হিসেবে সে ডামি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিকেতনের একটি গাড়ির ‘শো রুম’ থেকে মুক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর একটার দিকে গুলশানের ডা. ফজলে রাব্বী পার্কের পাশে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যানার হাতে নিয়ে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করাসহ তাদের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করার জন্য উস্কানিমূলক স্লোগানসহ রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে জনমনে ভীতির সঞ্চার করছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে পালানোর চেষ্টাকালে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের মোবাইল ফোন জব্দ করে। মোবাইল ফোনগুলো ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামে বিভিন্নি গ্রুপ খুলে আসামিরা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও রাষ্ট্রের অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে নিজেরা সংগঠিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছে মর্মে পুলিশ দেখতে পায়।
এ ঘটনায় গুলশান থানার এসআই মাহাবুব হোসাইন ওইদিন সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা করেন।
মন্তব্য করুন