

হিরো আলমের বিরুদ্ধে আদালতে শুনানিতে তার সাবেক স্ত্রী রিয়া মনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘হিরো আলম মিডিয়া ডেকে সাইবার বুলিং করে যাচ্ছে। আমি নাকি বাজে মেয়ে, কলগার্ল। আমি নাকি দেহ ব্যবসা করি। আমার তো বাঁচার অধিকার আছে নাকি।’ এরপর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন রিয়া।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শুনানিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসানের আদালতে তিনি এসব কথা বলেন।
রিয়া মনি আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার (হিরো আলম) ৪ বছরের সংসার। তাও আমার বিরুদ্ধে এসব নোংরা কথা বলে যাচ্ছে৷ সে খেলা চলবে বলেও আমাকে হুমকি দিয়েছে। আমি সাইবার বুলিং থেকে বাঁচতে চাই।’
এসময় রিয়া মনিকে হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মামলায় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে কাঠগড়ায় তোলা হয়। এরপর চলতে থাকে দুই পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী হিরো আলমের পক্ষের আইনজীবী শান্তা সাছসিনা, রিপনসহ আরও অনেকেই তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষ জিয়াউর রহমান, অভিজিৎ মজুমদার এই জামিনের বিরোধিতা করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘দুইজনই সেলিব্রেটি। দুইজনই সাইবার বুলিং করেন। আমরা শান্তি চাই, মীমাংসা চাই। আসামি জামিন পেলে, আর এ বিষয়ে কিছু বলবে না। আমরা বন্ড দিতে রাজি। তবুও সমাধান চাই।’
শুনানি শেষে আদালত হিরো আলমকে ২০০ টাকা বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন। পরে ৬টা ৩৫ মিনিটে হাজতখানা থেকে হিরো আলম কারামুক্ত হয়ে মোটরসাইকেলযোগে চলে যান।
এর আগে হিরো আলমের মামলার শুনানির আগে আদালতে উপস্থিত সাংবাদিকদের রিয়া মনি বলেন, ‘হিরো আলমের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আমাকে যেমন বিনা কারণে জেল খাটিয়ে, তারও জেলে থাকা উচিত।
শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকা থেকে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে গত ১২ নভেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত হিরো আলম ও তার সহযোগী আহসান হাবিব সেলিমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুসারেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হিরো আলম ও বাদী রিয়া মনির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এরপর হিরো আলম বাদীকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। গত ২১ জুন বাদীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসা করার জন্য হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় একটি বাসায় ডাকা হয়। সেই সময়ে হিরো আলমসহ ১০-১২ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তারা বাদীর বর্তমান বাসায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধর করে। এই হামলায় বাদীর শরীরে জখম সৃষ্টি হয়। এ সময় তার গলায় থাকা ‘দেড় ভরি’ ওজনের স্বর্ণের চেইন চুরি করে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
ওই ঘটনায় গত ২৩ জুন হাতিরঝিল থানায় রিয়া মনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন