চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যার ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার মামলায় শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ও নোবেলের বাল্যবন্ধু এসএম ফরহাদের বিরুদ্ধে দুই কৃষকসহ চারজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসরাত জাহান মুন্নীর আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
সাক্ষীরা হলেন- দুই কৃষক শহিদ মিয়া ও মনির হোসেন, ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন ও অটোচালক মনির হোসেন।
এদিন দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি শেষ হলে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। জেরা শেষ হলে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।
২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর (৩৫) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ১৮ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু বিরুদ্ধে মামলা করেন শিমুর ভাই হারুনুর রশীদ।
তদন্ত শেষে একই বছরের ২৯ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগ পত্রে বলা হয়, ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি সকাল সোয়া ৮টায় আসামি নোবেলের বাল্যবন্ধু ফরহাদ নোবেলের বাসায় আসে। কলিং বেলের শব্দ শুনে নোবেলের স্ত্রী শিমু দরজা খুলে ফরহাদকে ড্রইং রুমে বসতে দিয়ে বেড রুমে গিয়ে নোবেলকে ফরহাদের আসার সংবাদ দেয়।
নোবেল ড্রইং রুমে গিয়ে ফরহাদের সঙ্গে দেখা করে তাকে চা খাওয়ার কথা বলে। নোবেল কিচেন রুমে চা বানাতে যায়। নোবেল চা বানাতে থাকা অবস্থায় শিমু বেড রুমে বসে মোবাইল ফোন দেখতে থাকে। নোবেল শিমুর মোবাইল ফোন দেখতে চাইলে সে মোবাইল ফোন দেখাতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে শিমু ফ্লোরে পরে যায় এবং নোবেল শিমুর গলার ওপর পা দিয়ে দাঁড়ায়। এতে শিমু মারা যায়। তখন শিমুর মরদেহ লুকানোর পরিকল্পনা করতে থাকে তারা।
এরপর তারা শিমুর মরদেহ বস্তায় ভেতরে ভরে প্লাস্টিকের রশি দিয়ে দুটি বস্তা একত্রে সেলাই করে। পরে ফরহাদ শিমুর মরদেহ নোবেলের গাড়ির পেছনের সিটে ওঠায়। এরপর কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আলীপুর ব্রিজ এলাকার ঝোপে মরদেহ ফেলে দেয়।