নতুন বিয়ে করা জামাইয়ের মতো গায়ে পাঞ্জাবি, পায়ে সুন্দর জুতো। হাতে থাকে বেশ কিছু জামাকাপড়। ভাবখানা এমন যেন শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছেন। এমন ছদ্মবেশে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা নিয়ে রওনা হন বাবা হাবিব উল্লাহ। তার আগে পথে চেকপোস্ট আছে কি না তা দেখতে অন্য গাড়িতে রওনা দেন ছেলে ছালাহ উদ্দিন। এরপর মোবাইলে বাবাকে নির্দেশনা দিতে থাকেন ছেলে। সেই নির্দেশনা শুনে রাস্তায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা নিয়ে আসেন হাবিব উল্লাহ।
দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করা বাবা-ছেলের এই গ্রুপকে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (২৪ জুন) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তারের পর পরের দিন রোববার এ তথ্য জানায় ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান।
ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান কালবেলাকে জানান, হাবিব উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা কারবার করে আসছিল। এজন্য বিভিন্ন ধরনের ছদ্মবেশ নিতো। তার ছেলে ছালাহ উদ্দিন সদ্য এইচএসসি পাশ করেছে। এ বয়সেই সে বাবার সঙ্গে এই কারবারে নেমেছে। তারা কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসার জন্য কখনো হাইওয়ে রাস্তা ব্যবহার করতো না। লোকাল রাস্তা দিয়ে অনেক ঘুরে তারা ইয়াবা নিয়ে আসতো।
তিনি বলেন, ইয়াবা পাঁচারের জন্য ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়কের বিকল্প পথে খুঁজে বের করেন তারা। কক্সবাজার থেকে প্রথমে বান্দরবান–রাঙ্গামাটি ও সবশেষ খাগড়াছড়ি হয়ে লোকাল বাসে কয়েক ধাপে ফেনী আসে মো. হাবিব উল্লাহ। তারপর তার ছেলে মো. ছালাহ উদ্দিনকে যেকোনো গাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ছালাহ উদ্দিন দাউদকান্দি টোলপ্লাজাসহ গুরুত্বপূর্ণ চেকপয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার বিষয়ে আগে হাবিব উল্লাহ জানায়। ছেলের ক্লিয়ারেন্সের ভিত্তিতে হাবিব উল্লাহ সুযোগ বুঝে বিভিন্ন ছদ্মবেশে কৌশলে ইয়াবার চালান নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় একই কৌশলে কয়েকদিন আগেও বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পাচার করেছে তারা।
তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন