৭০ টাকার ওষুধে সাত টাকা কম না নেয়ায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটলো খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজের কে-৩২ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মেডিকেলের সামনের এক ওষুধের দোকানদার ১০% কম না নেওয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে দফায় দফায় হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে খোদ পুলিশের সামনেই। সর্বশেষ মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সাথে খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা যোগ দেয় এবং রাত ১২টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে ওষুধের দোকানের হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিল ইন্টার্ণ চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হামলায় ওষুধের দোকানের মালিক-কর্মচারীসহ ১০/১৫জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। হামলা-পাল্টা হামলার এক পর্যায়ে সেখানে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, খুলন সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর হাসান ইফতেখার , খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা: দ্বীন-উল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ ও খুলনা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা: মো. মেহেদী নেওয়াজ, বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এসএম কবির উদ্দিন বাবলুসহ চিকিৎসক ও বিসিডিএস নেতারাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তর ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জোহা সজিব বলেন, ওষুধের দোকানদারদের হামলায় একজন চিকিৎসকসহ সাতজন মেডিকেল শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হামলায় ওষুধের দোকানের মালিক-কর্মচারীদের মধ্যে অন্তত ১৫জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, ওষুধের দোকানদার ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্ণারে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী কিছু ওষুধ কিনতে যান। সেখানে ওষুধের মোট মূল্য হয় ৭০ টাকা। কিন্তু ওই সত্তর টাকার ওষুধে ১০% কমিশন দিয়ে ৬৩ টাকা রাখার অনুরোধ করেন হাসান ফেরদৌস নামের ওই মেডিকেল শিক্ষার্থী। কিন্তু মাত্র ৭০ টাকার ওষুধে কোন কমিশন নেয়ার সুযোগ নেই জানালে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে আশপাশের ওষুধের দোকানদাররা এগিয়ে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এক পর্যায়ে মেডিকেলের তিন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর ক্যাম্পাসে পৌঁছলে আরও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে ওষুধের দোকানের ওপর হামলা চালানো হয়।
খবর পেয়ে সেখানে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ গেলে পুলিশের সামনেই ওষুধের দোকানদারদের দফায় দফায় হামলা চালায় মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। পরে ওষুধের দোকানদারদের সাথে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে পাল্টা হামলা করলে সংঘর্ষ তুমুল আকার ধারণ করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকানগুলো বন্ধ ছিল এবং পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মন্তব্য করুন