খুবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জঙ্গি নাটকে পাঁচ বছর কারাগারে খুবির দুই শিক্ষার্থী

২ শিক্ষার্থীর মুক্তি চেয়ে খুবি চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করেন সহপাঠী, পরিবারের সদস্য, শিক্ষক ও আইনজীবীরা। ছবি : কালবেলা
২ শিক্ষার্থীর মুক্তি চেয়ে খুবি চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করেন সহপাঠী, পরিবারের সদস্য, শিক্ষক ও আইনজীবীরা। ছবি : কালবেলা

পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ২ শিক্ষার্থীর মুক্তি চেয়েছেন সহপাঠী, পরিবারের সদস্য, শিক্ষক ও আইনজীবীরা।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক ব্রিফিংয়ে তারা এ দাবি করেন।

এ সময় স্বজনরা বলেন, আওয়ামী সরকারের পরিকল্পিত সাজানো জঙ্গি নাটকে দুই শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করা হয়েছে। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। মিথ্যা মামলার শুনানি নেই প্রায় দুই বছর।

ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ও পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের দুই শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ অনিক ও মোজাহিদুল ইসলাম রাফি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুবি শিক্ষার্থী আহমদ উল্লাহ মৃধা। তিনি বলেন, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হয় অনিক ও রাফি। অনিক ওই দিন সকালে রুমে ঘুমিয়ে ছিল। হলের অফিস ক্লার্ক এনামুলকে দিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে গল্লামারি ঘোষ ডেয়ারির সামনে নিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়। আর রাফিকে গ্রেপ্তার করে তার ভাড়া বাসা থেকে, যেখানে তিনি স্ত্রীসহ বসবাস করতেন।

তাদের ১৭ দিন গুম করে রেখে ২৫ জানুয়ারি আদালতে তোলে পুলিশ। এর মধ্যে প্রশাসন জঙ্গি নাটকের স্ক্রিপ্ট সাজিয়ে একে একে ৭টি মামলা দেয় তাদের নামে, যার মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনা। অথচ ওই সময় খুলনার কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

রাফির বাবা রেজাউল করিম বলেন, রাফিকে ক্রসফায়ারের হুমকিও দেয়। ইলেকট্রিক শক দেওয়া, ঝুলিয়ে রাখা থেকে শুরু করে এমন কোনো অত্যাচার নেই যা করা হয়নি। পরে তাকে কিছু কাগজে সই করতে বাধ্য করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে ১৭ দিনেই তাদের প্রকাশ্যে আনতে বাধ্য হয়। অন্যায়ভাবে ওদের ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে। স্বৈরাচার সরকার পতনের পর গত সেপ্টেম্বর ও নভেম্বরে অনিক ও রাফি কারাগারে অনশন করেন; কিন্তু তাতেও প্রশাসনের টনক নড়েনি।

প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই অন্যায় আটক ও সাজানো নাটকের প্রত্যাখ্যান করছি। বিগত দিনে আওয়ামী লিগ সরকার শিক্ষিত তরুণদের কণ্ঠ রোধ করতে একের পর এক জঙ্গি নাটক সাজিয়ে নিরীহদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে।

ভুক্তভোগী পরিবাররা জানান, মিথ্যা মামলা টানতে টানতে আমাদের পরিবার এখন অসহায়। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার ও নিঃস্বার্থ মুক্তি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ আমাদের সন্তানদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।

হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সৈয়দ আজহারুল ইসলাম বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা খুব জীবনমুখী ছিল। তৃতীয় বর্ষ থেকেই তারা উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছিল। নিয়মিত ক্লাসে আসত ও পড়াশোনা করত। তাদের ভেতর জঙ্গির মতো কোনো আচরণ দেখিনি। আমার ছাত্রদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কক্সবাজারে পর্যটকদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

ইসরায়েলের সব কূটনীতিককে বহিষ্কারের নির্দেশ কলম্বিয়ার

সবগুলোকে নিয়ে সংসার করব: স্বস্তিকা মুখার্জি

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ আজ

কাচঁপুর সেতুতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

বাল্যবিয়ে করতে এসে কারাগারে গেলেন বর

ইসরায়েলের বাধা সত্ত্বেও গাজার দিকে যাচ্ছে ৩০ নৌযান

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

১০

তারকা ফুটবলারকে ছাড়া বড় চমক রেখে ব্রাজিলের দল ঘোষণা

১১

ফের মা হতে চলেছেন সোনম কাপুর

১২

অপরূপ সৌন্দর্যের জলফড়িং পিঙ্গল বুনো উকরি

১৩

রাজধানীর যেসব ঘাটে হবে প্রতিমা বিসর্জন

১৪

বিলিয়নিয়ার ক্লাবে শাহরুখ খান

১৫

পীরগাছায় মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত : পরিস্থিতি কেমন ও ঝুঁকি কতটা

১৬

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মী

১৭

অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেলেন রিয়া চক্রবর্তী 

১৮

সুমুদ ফ্লোটিলায় গ্রেটা থুনবার্গসহ কর্মীরা ইসরায়েলি হেফাজতে

১৯

ট্রেনের নিচে মিঠুন, ঋণের বোঝায় দিশেহারা মা

২০
X