চবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৫, ০৭:৫৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

চবির সৌন্দর্য গ্রীষ্মের উত্তাপকেও হার মানায়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জারুল, কৃষ্ণচূড়া ও সোনালু ফুল। ছবি : কালবেলা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জারুল, কৃষ্ণচূড়া ও সোনালু ফুল। ছবি : কালবেলা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এখন যেন প্রকৃতির এক সজীব রঙের রাজ্য। গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহ যখন চারপাশকে নিস্তেজ করে তোলে, তখন এই সবুজ ক্যাম্পাস রঙিন হয়ে ওঠে জারুল, কৃষ্ণচূড়া আর সোনালুর মনোমুগ্ধকর ফুলে। প্রতিটি পথ, মোড় আর উন্মুক্ত প্রান্তর যেন রঙের ছোঁয়ায় নতুন জীবন পায়, প্রকৃতি যেন নিজ হাতে আঁকে এক অনবদ্য চিত্রপট।

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধরাতে যেমন পরিবর্তন আসে তেমনি সবুজে ঘেরা এ ক্যাম্পাসেও নতুন আবহের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সবটুকুই যেন মেলে ধরেছে পাহাড়ে ঘেরা এ অপরূপ ক্যাম্পাসে। রূপের রানি খ্যাত এই ক্যাম্পাসে প্রতিটি ঋতুতে দেখা মিলে নতুন নতুন চিত্র। শীত, গ্রীষ্ম, কিংবা বর্ষার আগমনে এখানে আনে নব এক উদ্দীপনা। প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় সঞ্চারিত হয় প্রাণ।

গ্রীষ্মের আগমনে চারিদিকে ফুটতে শুরু করেছে নানা প্রজাতির ফুল। সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, জারুল, চম্পা, করবী, পত্রলেখা, জবা, টগর, স্যালভিয়া, ভৃঙ্গরাজ, রঙ্গন, বাগান বিলাসসহ অসংখ্য ফুল শোভা ছড়াচ্ছে চবি ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলা, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, আইন অনুষদ কিংবা আইইআর-এর সক্রেটিস চত্বর—সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে জারুলের বেগুনি মায়া। নীলচে আভায় ঢাকা গাছগুলো যেন এক নিঃশব্দ কাব্যগাথার জন্ম দেয়। জীবনানন্দ দাশের ভাষায় বলতে হয়, ‘ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ-দুপুর—জারুল গাছের ডালে বসে থাকে একা চিল।’

ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে এই দৃশ্য মনে করিয়ে দেয় মায়াবী নীলে ভেজা জারুল যেন প্রকৃতির এক গোপন প্রেমপত্র।

অন্যদিকে কৃষ্ণচূড়ার আগুনরাঙা সৌন্দর্য যেন গ্রীষ্মের উত্তাপকেও হার মানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশ থেকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সড়কপথ—সবখানেই কৃষ্ণচূড়ার উজ্জ্বল লাল ফুলের মেলার দেখা মিলে। ঝলমলে রোদে কৃষ্ণচূড়া যেন রক্তিম শিখার মতো দগ্ধ করে পথচারীর হৃদয়। প্রকৃতির এই অনবদ্য শিল্পকর্ম মুগ্ধ করে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রতিটি দর্শনার্থীকে।

এদিকে সোনালু ফুলের স্নিগ্ধ সৌন্দর্য ক্যাম্পাসের রঙিন আয়োজনকে এনে দেয় শান্তির পরশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ, আইইআর ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ প্রাঙ্গণে ঝুলে থাকা সোনালু ফুলের ঝাড়গুলো রোদে ঝিলমিল করে, দেখে মনে হয় যেন সূর্যের কিরণও এই ঝুমকাগুলোর কাছে হার মানে। সোনালুর হলুদ ছায়া গ্রীষ্মের ক্লান্ত দুপুরেও এনে দেয় অনাবিল প্রশান্তি।

সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কোণ আজ যেন এক রঙিন শিল্পকর্ম। ফুলের সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে শিক্ষার্থীরা মুঠোফোন আর ক্যামেরায় বন্দি করছেন সুন্দর মুহূর্তগুলো। যারা এই দিনে ক্যাম্পাসে হাঁটছেন, তাদের কাছে চবি যেন এক স্বপ্নের রাজ্য—যেখানে প্রকৃতি তার অনবদ্য সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে।

গ্রীষ্মের কড়া রোদ আর ক্লান্তি ভুলিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এভাবেই পরিণত হয়েছে রঙের এক প্রাণবন্ত উৎসবে—যেখানে প্রতিটি ফুল কথা বলে, প্রতিটি রং হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্ল্যান গণমাধ্যম পুরস্কার পেলেন কালবেলার জাফর ইকবাল

পটুয়াখালীতে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ নারীর মৃত্যু

১১ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল

এইচএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের তারিখ জানাল শিক্ষা বোর্ড

রামাল্লায় পৌঁছেছে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বহনকারী বাস

রাকসু নির্বাচন  / ‘আকাশকুসুম’ ইশতেহারে ভোটার টানার চেষ্টায় প্রার্থীরা

বিইউবিটিতে শিক্ষক দিবস উদযাপন

সুন্দর সমাজ গঠনে সৃজনশীলতাকে প্রাধান্য দিতে হবে : সাদিক কায়েম

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা

ইসরায়েলের সব জিম্মিকে মুক্তি দিল ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা

১০

নবীনদের বরণ করে নিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

১১

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার ২ নেতা গ্রেপ্তার

১২

স্পিড স্কেটিংয়ে জোড়া স্বর্ণপদক জিতলেন পৃথিবী

১৩

এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস

১৪

একটি দল চাঁদাবাজকে ফুল দিয়ে বরণ করেছে : স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি

১৫

প্রতিবন্ধী শিশুকে হুইলচেয়ার উপহার দিলেন তারেক রহমান

১৬

নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী

১৭

ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন, নতুন ঘর দিচ্ছেন তারেক রহমান

১৮

অতিরিক্ত সিম নিয়ে বিটিআরসির জরুরি বার্তা

১৯

‘শেখ হাসিনার করুণ পরিণতির বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন সালাউদ্দিন কাদের’

২০
X