ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সাম্প্রতিক আইপিএলে ক্যাপড আর আনক্যাপড ক্রিকেটারদের বেতন নিয়ে সিদ্ধান্তে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ক্রিকেট কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। তার মতে, এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের ভারতীয় ক্রিকেটকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। বিসিসিআই ২০২৫ আইপিএলের আগে যে নিয়ম বদলেছে, সেটিকে ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে সুবিধা দিতে ‘নিয়মের অপব্যবহার’ বলেই মনে করছেন তিনি।
স্পোর্টস্টার-এ লেখা কলামে গাভাস্কার সরাসরি বলেন, ‘মহেন্দ্র সিং ধোনিকে আনক্যাপড খেলোয়াড় হিসেবে দেখাতে গিয়ে বেতনসীমা বাড়িয়ে ৪ কোটি রুপিতে তোলা হয়েছে। এটি একটি হতাশাজনক দৃষ্টান্ত, যেখানে প্রথা বা ন্যায়ের চেয়ে সুবিধা দেওয়াই মুখ্য হয়েছে।’
বিসিসিআই একটি পুরনো নিয়ম পুনরুজ্জীবিত করেছে, যা ২০২১ সালে বাতিল হয়েছিল। সেই নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ভারতীয় খেলোয়াড় যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলে পাঁচ বছর পার করে, তাহলে তাকে “আনক্যাপড” ধরা হবে। এই নিয়মই ধোনির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে চেন্নাই সুপার কিংস তাকে ‘আনক্যাপড’ ক্যাটাগরিতে রেখে মাত্র ৪ কোটি টাকায় ধরে রাখতে পেরেছে।
গাভাস্কারের মূল উদ্বেগ বড় অঙ্কে কেনা নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে। তিনি লিখেছেন, “অনেক আনক্যাপড খেলোয়াড় বিপুল অর্থ পেয়েই যেন খেলার প্রতি ক্ষুধা হারিয়ে ফেলে... সফল হোক বা না হোক, একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় হারিয়ে যাওয়াটাই ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষতি।”
তিনি আরও বলেন, ‘এত বছরেও কেউ একজন আনক্যাপড খেলোয়াড়ের উদাহরণ দেখাতে পারবেন না, যে উচ্চমূল্যে কিনে নিয়ে নিজের যোগ্যতা পুরোপুরি প্রমাণ করেছে।’
এই প্রেক্ষাপটে গাভাস্কার বিসিসিআইকে অনুরোধ করেছেন, যেন পুনরায় নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তটি বিবেচনা করে এবং আনক্যাপড খেলোয়াড়দের জন্য একটি নির্দিষ্ট বেতনসীমা নির্ধারণ করা হয়।
তার মতে, ‘খেলোয়াড়দের চাপ ও মূল্য যখন কমে, তখনই তারা আসল পারফরম্যান্স দেয়। তাই সামগ্রিকভাবে ভারতীয় ক্রিকেটকে রক্ষা করতে হলে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
গাভাস্কারের এই মন্তব্য বিসিসিআই ও আইপিএলের ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারনে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আইপিএলের জৌলুশে যখন তরুণরা আকৃষ্ট হচ্ছে কোটিপতি হবার স্বপ্নে, তখন সাবধান করে দিলেন এক কিংবদন্তি – ক্রিকেট শুধু খেলার নাম নয়, দায়িত্বেরও।
মন্তব্য করুন