রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিনসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইউট্যাবের শিক্ষক নেতারা।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান।
শিক্ষকদের অন্য দাবিগুলো হলো- শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, দোষীদের কেউ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-রাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে থাকলে নির্বাচনে তাদের অযোগ্য ঘোষণা করা, রাকসু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউট্যাব সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রশিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা এই পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করছি। আমাদের এই দাবিগুলো অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় শিক্ষক সমাজ আরও কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউনে যেতে বাধ্য হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ইউট্যাবের অন্য শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের মাত্র ৫ দিন আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোট) পুনর্বহাল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পুনর্বহালের দিন থেকে শিক্ষার্থীরা এই পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন আন্দোলন করে আসছিল। এই পোষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জুবেরী ভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
এর প্রতিবাদে ২০ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরের দিন থেকে শুরু হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও ইউট্যাবের শিক্ষকরা শুরু করেন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি। ফলে এমন পরিস্থিতিতে রাকসু নির্বাচন কমিশন চতুর্থবারের মতো রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করে।
এরই মধ্যে বুধবার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কমপ্লিট শাটডাউন সাত দিনের জন্য স্থগিত করে। বৃহস্পতিবার জাতীয়বাদী শিক্ষকরাও তাদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি স্থগিত করে। তবে শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মন্তব্য করুন