

চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ছিটকে নিচে পড়ে দুর্ঘটনার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। এ দুর্ঘটনায় শফিকুর রহমান (৫৫) নামে চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মচারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন।
নিহত শফিকুর রহমান ৩৬নং পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা ছালে আহমদ কন্ট্রাক্টরের বাড়ির মো. ইমরান শরিফের পুত্র। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের স্টাফ এবং বন্দর থানা কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িতে এক তরুণীসহ ৪ যুবক ছিলেন। তারা পতেঙ্গা বিচ থেকে যাচ্ছিলেন। চার যুবকের মধ্যে একজন গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন। এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে তীব্র গতিসম্পন্ন গাড়িটি নিচে পড়ে যায়। গাড়িতে থাকা পাঁচ তরুণ-তরুণী হলেন— সৈয়দা সমরাজ মাখনু (২৩)। তিনি চান্দগাঁও থানার মধ্যম মোহরা গ্রামের সমদ আলী খান চৌধুরী বাড়ির সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদের মেয়ে। অপর চার তরুণ হলেন— চান্দগাঁও আবাসিক, বি-ব্লক ১নং রোডের সিদ্দিক আহম্মেদের পুত্র মো. ইউসা (২৩), বায়েজিদ শেরশাহ বাংলাবাজার এলাকার মাহাবুব আলমের পুত্র তাহসিন মোহাম্মদ তানিম (১৮), সদরঘাট এলাকার পোড়া মসজিদের পাশে বিসমিল্লাহ ট্রান্সপোর্টের মালিক আরিফুর রহমানের পুত্র মো. মোস্তাফিজুর রহমান রায়াত (১৯) এবং মো. সাকিব (২৫)।
যানবাহন চালকদের ভাষ্য, চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নির্ধারিত গতিসীমা মানা হচ্ছে না। ফাঁকা পেলেই সেখানে দ্রুতগতিতে চলছে যানবাহন। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চলছে মোটরসাইকেল। গাড়ি থেকে প্রথমে ১৮-১৯ বছর বয়সি এক তরুণী বের হয়ে আসেন। তারপর স্থানীয়রা মিলে গাড়ি থেকে আরও ৪ জনকে বের করে আনেন।
থানা সূত্র জানায়, গাড়িটি যে স্থান থেকে ছিটকে পড়েছে, সেখানে বাঁক রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ের ওপর দিয়ে তীব্র গতিসম্পন্ন গাড়িটি নিচে পড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল।
অভিযোগ আছে, চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ের দেওয়ানহাট, বারিক বিল্ডিং, সল্টগোলা, ইপিজেড, কাঠগড় এলাকায় অনেকগুলো বাঁক রয়েছে। বাঁকগুলোতেও গাড়ির গতি কমানোর প্রবণতা কম চালকদের। বিশেষ করে উঠতি বয়সি তরুণরা এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকার এবং মোটরসাইকেল নিয়ে উঠে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে থাকেন। এক্সপ্রেসওয়ের অনেক জায়গায় তরুণদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেও দেখা যায়। এসবের কারণে সেখানে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
সিডিএর ভাষ্য, চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করা হয় ৬০ কিলোমিটার। তবে আঁকাবাঁকা অংশে সর্বোচ্চ গতিসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৪০ কিলোমিটার। কিন্তু গতকাল টয়োটা হ্যারিয়ার নামে গাড়িটি ১০০ ফুট ওপর থেকে ৮০ কিলোমিটারের বেশি স্পিডে নিচে আছড়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা আহমেদ কালবেলাকে বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
মন্তব্য করুন