

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতীতে গারোদের তিন দিনব্যাপী ওয়ানগালা উৎসব শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) থেকে উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জ ধর্মপল্লীতে এ উৎসবের শুরু হয়।
গারোদের শস্য দেবতার ওপর নির্ভর করে ফসলের ভালো ফলন। এই শস্য দেবতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির পাশাপাশি ‘পরিবারে ভালবাসা, আনন্দ, সব পরিবারের মঙ্গল কামনা করে’ গারো সম্প্রদায়রা পালন করেছেন ওয়ানগালা নবান্ন উৎসব।
উৎসব উদ্বোধন করেন ঢাকা মহা ধর্মপ্রদেশের কার্ডিনাল বিশপ প্যাট্রিক ডি. রোজারিও। এরপর খ্রিষ্টযাগ অর্পণ করেন ওয়ানগালা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ফাদার লরেন্স রিবেরু। সকালে কুতুব পড়িয়ে এবং খ্রিষ্ট পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা করা হয়। এ সময় গারোদের ১৩টি গোত্রের মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসল এনে খ্রিষ্টের নামে উৎসর্গ করেন। এরপর উপস্থিত সবাইকে থক্কাদান কপালে নতুন ধানের চালেরগুঁড়ো দিয়ে আশীর্বাদ শেষে গির্জায় প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া এ উৎসব ঘিরে বিদ্যালয়ের মাঠে ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে বসে মেলা।
ওয়ানগালা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ফাদার ফাদার লরেন্স রিবেরু জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর উদ্যোগে ওয়ানগালা উৎসব পালন করা হচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য। আগামী রোবাবর বিকেলে এ উৎসব শেষ হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গারোদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ‘ওয়ানগালা’। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মনোবাসনার নানা নিবেদন হয় এ উৎসবে। সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর আগে নতুন খাদ্যশস্য ভোজন নিষেধ থাকে। এজন্য একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলে থাকেন। আবার ওয়ানগালা উৎসব একশ ঢোলের উৎসব নামেও পরিচিত।
মন্তব্য করুন