সদ্য সমাপ্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। এতে ছাত্রদলের প্রার্থীরা ৬ ভিপি-জিএসসহ বিভিন্ন হলের ১৯ পদে নির্বাচিত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদে ছাত্রশিবির একচেটিয়া জয় পেলেও হলে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রদের জন্য ৯টি আবাসিক হল রয়েছে। ছাত্রদল হলে প্যানেল ঘোষণা না করলেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোটবেঁধে বা স্বতন্ত্রভাবে লড়েছেন। এর ফলে ছয়টি হলে গুরুত্বপূর্ণ পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থীরা। ছাত্রদল ভিপি-জিএস দুটি পদেই জিতেছে এএফ রহমান ও সূর্যসেন হলে। এ ছাড়া শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে ভিপি ও আলাওল হলে জিএস পদে জিতেছে ছাত্রদল।
এদিকে ছাত্রশিবির সাতটি হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিলেও শুধু সোহরাওয়ার্দী হলে ও শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে তারা পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে জয় পেয়েছে। অন্য হলে তেমন সাফল্য পায়নি।
এএফ রহমান ও আলাওল হলে ছাত্রশিবিরের ভালো প্রভাব থাকলেও শীর্ষ পদগুলোতে হেরেছে তাদের প্রার্থীরা। ফলে আলাওল হলে চালু করা মিল সিস্টেম প্রায় বন্ধের পথে। আলাওল হলে শিবির জয় পেয়েছে মাত্র চারটি পদ— এর মধ্যে এজিএস (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) ও দুটি সম্পাদকীয় পদ। বিপরীতে ছাত্রদল পেয়েছে পাঁচটি পদ— এর মধ্যে আছে জিএস, লাইব্রেরি ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, খেলাধুলা সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ।
অন্যদিকে শাহজালাল হলে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা জিএস, এজিএস ও দুই সম্পাদকীয় পদে হেরে যান। এখানে ছাত্রদল এজিএস এবং সমাজসেবা ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে জয় পেয়েছে। শাহ আমানত হলে শিবির হারিয়েছে ভিপি পদ, যেখানে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। সমাজসেবা সম্পাদক পদটিও গেছে ছাত্রদলের হাতে।
সূর্যসেন হলেও ভিপি, জিএস ও লাইব্রেরি সম্পাদক পদে জিতেছে ছাত্রদল। বাকি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। একইভাবে শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলেও ছাত্রদলের প্রার্থীরা ভিপি, দপ্তর সম্পাদকসহ চারটি পদে জয়ী হয়েছেন। ছাত্রীদের নবাব ফয়জুন্নেসা হলে যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদেও জয় পেয়েছেন ছাত্রদল-সমর্থিত প্রার্থী। কেন্দ্রীয়ভাবে একচেটিয়া পরাজয়ের পর হলে এ ফল তাদের জন্য ইতিবাচক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্রদলের কোনো কমিটি নেই। প্রভাবও তুলনামূলক দুর্বল। তবুও, ভিপি-জিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে জয় ছিনিয়ে এনেছে ছাত্রদল প্যানেল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান কালবেলাকে বলেন, ‘ছাত্রদলের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এ কৌশল সফল হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৯টি পদে আমাদের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।’
আবদুল্লাহ আল নোমান আরও বলেন, ‘এ ফল আমাদের জন্য নতুন সূচনা। আমরা ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক রাজনীতির নতুন ধারা তৈরি করতে চাই। কেন্দ্রীয় সংসদে পরাজয়ের পর হলে এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে।’
মন্তব্য করুন