

অর্থনৈতিক সংকট ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বেড়াজাল ভেদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন আবারও জেগে উঠল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন ইসলামের জন্য এই স্বপ্নপূরণের দূত হয়েছেন একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম।
আর্থিক দুরবস্থার কারণে নিজের জন্য একটি হুইলচেয়ার কেনা ইমনের পক্ষে কখনোই সম্ভব হয়নি। এই প্রতিবন্ধকতা তাকে প্রতিদিনের চলাচলে সম্পূর্ণরূপে অন্যদের ওপর নির্ভরশীল করে রেখেছিল। তার এই কষ্টের কথা জানতে পেরে অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম এগিয়ে আসেন এবং ব্রাক ব্যাংক-এর মাধ্যমে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মানসম্মত হুইলচেয়ার ক্রয়ের ব্যবস্থা করেন।
এই সময়োপযোগী ও মানবিক সাহায্য ইমন ইসলামের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। এখন তিনি নিজেই সহজে এবং স্বাবলম্বীভাবে ক্যাম্পাসে ও বাইরে চলাফেরা করতে পারেন যা তার শিক্ষাজীবন ও ব্যক্তিগত বিকাশে একটি বিশাল মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যালি-চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ)-এর সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাফিজ ফাহিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নানা বাধা রয়েছে। শফিকুল ইসলাম স্যারদের মতো মহানুভব ব্যক্তিদের সহায়তায় তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। তবে প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া শহীদ সাজিদ ভবনে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত সম্ভব নয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনের ন্যূনতম নিচতলায় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন (১:৬ অনুপাতে) র্যাম্প নির্মাণের মাধ্যমে প্রশাসন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বাধা দূর করবে।
এই বিষয়ে অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি নিজেকে শুধু একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমে’স ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক মনে করি না। আমি নিজেকে পুরো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক মনে করি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রী এই আমার শিক্ষার্থী। আমার মতে একজন শিক্ষকের দায়িত্ব শুধু পড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষার্থীদের বিপদে আপদে সবসময় তাদের পাশে থাকাও প্রতিটা শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৭০০ জন শিক্ষক রয়েছে। সবাই যদি একজন করেও অসহায় শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ায় তাহলে ৭০০ জন শিক্ষার্থীর জীবন সুন্দরভাবে গড় উঠবে।
মন্তব্য করুন