রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
সুইমিংপুলে ছাত্রীর মৃত্যু

বিক্ষোভে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি : কালবেলা
ছবি : কালবেলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসেন (২২) নামে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

তারা অভিযোগ করেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়—বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও মেডিকেল সেন্টারের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে।

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন, সায়মার মৃত্যু “হার্ট অ্যাটাক”-এর কারণে হতে পারে। তবে শিক্ষার্থীরা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসজুড়ে মিছিল বের করেন।

এরপর রাত ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের অবহেলার বিচার না হলে শিক্ষার্থীদের জীবন আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

রাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, আমরা দীর্ঘক্ষণ ধরে আন্দোলন করছি, কিন্তু প্রশাসনের কোনো প্রতিনিধি এসে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেনি। প্রতিবারই প্রশাসন এমনভাবে সময়ক্ষেপণ করে। শিক্ষার্থীদের কষ্ট, ক্ষোভ ও শোককে তারা তুচ্ছ করে দেখছে। আমরা এখান থেকে বিচার নিশ্চিত না করে ফিরব না ইনশাআল্লাহ।

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, একজন শিক্ষার্থী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে—তাহলে তার ফিটনেস টেস্ট করা হয়নি কেন? শারীরিক শিক্ষা বিভাগ কীভাবে একজন শ্বাসকষ্টের রোগীকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনুমতি দিল? সুইমিংপুলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কোথায় ছিলেন, যখন একজন শিক্ষার্থী আধা ঘণ্টা ধরে পানিতে নিস্তেজ অবস্থায় ছিলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর প্রশাসনকেই দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাবি মেডিকেল সেন্টারের অব্যবস্থাপনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে আধমরা অবস্থায় রামেকে পাঠানো হয়েছিল। আজও সায়মাকে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেনি তারা। সায়মার মৃত্যুকে আমরা ‘দুর্ঘটনা’ নয়, অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখছি। আমরা অবিলম্বে স্বচ্ছ তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেখানে ফরিদ সাহবকে (উপ-উপাচার্য) রাখা হয়েছে যাতে কোনো গড়িমসি না হয়। তারা ৭২ ঘন্টার মধ্যে একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দিবেন। সেটা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৃষ্টির জয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন

দ্বিদলীয় ভাগাভাগির মাধ্যমে ইসি তার সব নিরপেক্ষতা হারিয়েছে : সামান্তা শারমিন

শেষ বাঁশির পর বার্নাব্যুতে বিশৃঙ্খলা, বার্সা-রিয়ালের সংঘর্ষে পুলিশের হস্তক্ষেপ

দেশের সর্ববৃহৎ ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এখন ওয়ালটনে

২৮ অক্টোবর : লগি-বৈঠার পৈশাচিকতার কালো অধ্যায়

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে সোয়াটের টহল

ঢাবির রোকেয়া হলে ফার্স্ট এইড ট্রেনিং সম্পন্ন

জবাবদিহির অভাবেই ফ্যাসিবাদ তৈরি হয় : চরমোনাই পীর

শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের জন্মবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল

সুইমিংপুলে ছাত্রীর মৃত্যু / বিক্ষোভে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

১০

নির্বাচনী খায়েশ থাকলে পদত্যাগ করুন, উপদেষ্টাদের ব্যারিস্টার অসীম

১১

জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষায় এনটিএমসির নিরবচ্ছিন্ন পথচলা

১২

জাতির উন্নয়নে শিক্ষার বিকল্প নেই : বিএনপি নেতা কাইয়ুম

১৩

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ

১৪

এমবাপ্পে-বেলিংহ্যামে ভর করে রিয়ালের ক্লাসিকো জয়

১৫

নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই : লায়ন ফারুক

১৬

অ্যাস্টন ভিলার কাছে হোঁচট খেল ম্যানসিটি

১৭

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বৈঠকে ডাক পেয়ে মঞ্জুর ‘চমক’

১৮

ভূমি সচিবের বিরুদ্ধে ১০ লাখ মামলা

১৯

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় অ্যাড. বশির নিহত

২০
X