আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাস। তবে, ওই শিক্ষার্থীকে অসুস্থ দাবি করে তাকে সেখান থেকে নিয়ে গেলেন তার মামা ডা. তন্ময়।
জানা গেছে, শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন আকাশ বিশ্বাস। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মামা তাকে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। এসময় সেখানে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা, বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় কিছু শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অসুস্থ নন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে অসুস্থ বানাচ্ছে।
জগন্নাথ হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা কালবেলাকে বলেন, ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অসুস্থ বলে শুনেছি। এজন্য সে একাধিকবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্নও হয়েছে। তার মামাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় বেশ কয়েকবার রাজধানীর তাকওয়া স্পেশালাইজড হসপিটালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সিফাত-ই-সাইদের শরণাপন্ন হয়েছেন আকাশ বিশ্বাস। বিষয়টি স্বীকার করেছেন তার মামা ডা. তন্ময়ও।
তিনি বলেন, সে (আকাশ) ডা. সিফাতের কাছে চিকিৎসা নিয়েছিল। কিন্তু কীভাবে এখানে বসল সেটা আমরা জানি না। মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসি। এখন ওকে নিয়ে যাচ্ছি তার বাবার কাছে। আকাশের এখানে অবস্থানের খবর শুনে ওর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহা বলেন, ওই শিক্ষার্থীর মামা বলেছেন, সে অসুস্থ। তার বাবাও অসুস্থ। সে কারণে তিনি ওকে নিতে এসেছেন। এটা নিয়েই শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হলে সহকারী প্রক্টর হিসেবে আমাদের যাওয়া বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়ে, সেজন্যই আমরা এসেছিলাম। কারা ওই শিক্ষার্থীকে এখানে বসিয়েছে সেটি ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবার ভালো বলতে পারবে।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আকাশ বিশ্বাস ৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- একদলীয় সরকারের অধীনে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে; জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে; গুম, খুন, নির্যাতনের বিচার করতে হবে ও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে; সকল নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে এবং রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন বন্ধ করতে হবে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন