চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তুলেছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার চৌধুরী বরাবর যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী বিজ্ঞান অনুষদের সামনে বুধবার বেলা ২টার দিকে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন করতে নামেন। কিন্তু উপাচার্যের ফোনকল পেয়ে সেই মানববন্ধনটি স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। একই বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, এ ব্যাপারে উপাচার্য আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন খতিয়ে দেখবেন। কোনো পদক্ষেপ না নিলে আমরা আগামীকাল আবারও প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করব।
চবি উপাচার্যকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আমি ওই শিক্ষকের অধীনে থিসিস করছি। থিসিস চলাকালীন সময়ে আমার সুপারভাইজর যৌন হয়রানি করেন। আমি তার নিপীড়নের শিকার হই। থিসিস শুরুর পর থেকে তিনি আমার সাথে বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক যেমন জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করা, অসঙ্গতি ও অনুপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করেছেন। কেমিক্যাল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৬ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০টা ১০ মিনিটে আমি ল্যাবে একা কাজ করছিলাম। হঠাৎ তিনি (শিক্ষক) প্রবেশ করেন এবং আমাকে আবার জোর করে জড়িয়ে ধরেন। এ অবস্থায় আমি তাকে ধাক্কা মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে নেই। পরে তৎক্ষণাৎ আমার ল্যাবমেট এসে উপস্থিত হওয়ায় আমি কোনো রকম বেঁচে যাই। তারপর আমি ও আমার ল্যাবের বাকি মেয়েরা মিলে ল্যাবে আর একা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
গত ১৩ জানুয়ারি আনুমানিক ১২টা নাগাদ ওই শিক্ষক কেমিক্যাল দেওয়ার বাহানা করে রুমে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী। তিনি লিখেন, আমাকে ফ্রিজ থেকে কেমিক্যাল বের করারত অবস্থায় পিছন থেকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন। আমি তাকে ধাক্কা মেরে রুম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তিনি দরজা বন্ধ করে আমাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। আমি ধ্বস্তাধস্তি করে তার রুম থেকে আত্মরক্ষা করে পালিয়ে বাঁচি। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের শিকার হয়েছে তারা।
অভিযুক্ত ওই অধ্যাপকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার সম্পর্কে যেই অভিযোগ করা হয়েছে সেটি একদমই অসম্ভব ব্যাপার। আজ দুপুরের দিকে একজন সাংবাদিকের ফোন পেয়ে এই অভিযোগের ব্যাপারে প্রথম জানতে পারি। আমার বয়স ৬০ এর কাছাকাছি। আমার ৩১ বছরের শিক্ষকতা জীবন পার করেছি কিন্তু এ রকম তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়নি। এ অভিযোগের সঙ্গে আমার ন্যূনতম সম্পর্ক নেই।
এ ব্যাপার জানতে চাইলে চবি উপাচার্য বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আগামীকাল এ নিয়ে মিটিংয়ে বসব।
মন্তব্য করুন