রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন ১০তলা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান আবাসিক হলের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনা তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কাজ শুরু হয়নি।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এদিকে এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে চিঠি পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে। তবে তদন্তের সময়ও উপাচার্যের নির্দেশে কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকার জানান, তিনি রাজশাহীর বাইরে আছেন এবং কোনো অফিশিয়াল চিঠি পাননি।
কমিটির সদস্য মো. ইমরুল হাসান বলেন, সর্বশেষ কার্যদিবসে তিনি ছুটিতে ছিলেন। আর তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে সামনের কার্যদিবসপ চিঠি আসবে বলে আশা করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসান বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এখনো অফিস করতে পারেননি। তদন্ত কমিটির চিঠি তাঁর মাধ্যমেই পৌঁছাবে। চিঠির কাজ চলছে। আজ বিকেলে কিংবা আগামীকাল সকালে চিঠি ইস্যু করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের সামনে নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। এ ঘটনায় ৯ জন আহত হন। সেদিন রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ শেষ করে। ওই দিন রাতেই এক জরুরি সভা ডেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধসে যাওয়া অংশে কাজ না চললেও ভবনের বিভিন্ন জায়গায় কাজ চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড রূপপুরের ‘বালিশ-কাণ্ড’ ঘটনায় আলোচিত। বিভিন্ন সময়ে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও ধসে যাওয়া ভবনে বিদুৎপিষ্ট হয়ে একজন শ্রমিক মারা গেছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ওই ভবনে নানা ধরনের অনিয়ম রয়েছে। আগেও একটা শ্রমিক মারা গেছে। সকল শ্রমিকদের সিকিউরিটি ও সেফটি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত কাজ করতে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া তদন্ত চলমান অবস্থায় কাজ চলা আরো দুঃখজনক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে জায়গায় ধসে পড়েছে সেদিক কাজ চলছে না। অন্য জায়গায় উপাচার্য স্যারের নির্দেশে কাজ চলছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, যেখানে ধসে পড়েছে সেখানে নয়। আমি কাঠের কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে, এটা ছাড়া আমরা পিছিয়ে পরবো। তবে কোনো ধরনের কন্সট্রাকশনের কাজ চলবে না।
মন্তব্য করুন