গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক দাবি করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (৬ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসভবন সংলগ্ন স্মৃতি চিরন্তন চত্ত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সকল শ্রেণির কর্মচারীদের এই সংগঠনটি।
মানববন্ধনে তারা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সকল শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- 'সকল স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং উহাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে যে সকল কর্মকর্তা বা কর্মচারী, তাহারা যে নামেই অভিহিত হউন না কেন, ১ জুলাই, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ ও তৎপরবর্তী সময়ে নূতন যোগদান করিবেন, তাহাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভূক্ত' করবে উল্লেখ আছে। হঠাৎ করেই এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে।
তারা বলেন, এই প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারীরা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এছাড়া, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন বেতনভূক্ত কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সমর্থন করতে গিয়ে ১৯৪৯ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হন ও কারাবরণ করেন। এছাড়া, কর্মচারীদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উন্নত রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। কেননা, এর ফলে যোগ্য ও দক্ষ জনবল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাকরি করতে আগ্রহী হবেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের দাবি, এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দুরভিসন্ধি রয়েছে কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার। যে মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় এসে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মচারী সমাজও তাঁর উন্নয়ন যাত্রায় বিপুল উৎসাহ নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছেন, ঠিক সেই মুহুর্তে বিদ্যমান সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে আমাদের আন্দোলনের পথে ঠেলে দেওয়ার পুরনো কৌশল শুরু হয়েছে বলে আমরা মনে করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মচারীরা অনতিবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা ও অসন্তুষ্টি লাঘবের এবং নবম জাতীয় বেতনস্কেলের দাবি জানাচ্ছে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও কর্মচারী সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ এবং কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. মোবারক হোসেনসহ অনেকেই অংশ নেন।
মন্তব্য করুন