দেশের স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশনসংক্রান্ত ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতি। রোববার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানান তারা।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো পেনশন ব্যবস্থা ছিল না সেগুলোতে সর্বজনীন পেনশনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু দেশের ৪টি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলো ’৭৩-এর নিয়ম অনুযায়ী চলে সেগুলোতে পেনশন ব্যবস্থা আগে থেকেই চালু আছে। তারপরও বর্তমান সরকার কীসের ভিত্তিতে বা কার চক্রান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় নিয়ে এলো আমরা জানি না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ প্রজ্ঞাপনের বাইরে রাখার দাবি জানাচ্ছি।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘আগের পেনশন ব্যবস্থায় আমাদের কোনো সমস্যা হয় নেই। আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম। কিন্তু এ বছরের জুলাই থেকে যারা নতুন নিয়োগ পাবে, তারা এই স্কিমের আওতায় পড়বে। আর এ জন্য আমাদের সঙ্গে তাদের একটা বড় বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতি গঠনের কারখানা মনে করি। শিক্ষকরা এই কারখানার কারিগর হয়ে থাকেন। এ পেশায় যারা আসবেন তারা মেধাবী শিক্ষার্থী। তাই এখানে যাতে মেধাবীরা না আসে তার জন্য একটা চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।’
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে যখন সবাই প্রশংসা করছিল ঠিক সেই সময়ই এই বৈষম্যমূলক এই প্রত্যয় স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তটি আমাদের যে সংবিধান আছে সেটার মূল চেতনার পরিপন্থি। প্রজ্ঞাপনের এই সিদ্ধান্ত যদি প্রবর্তিত হয়, তবে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করবে তাদের সঙ্গে একটা বৈষম্য তৈরি হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়বে। এই দাবির প্রক্ষিতে আগামী ২৮ তারিখ দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করব। তারপরেও যদি দাবি মানা না হয় তাহলে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।’
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ওমর ফারুক সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মানিকুল ইসলাম, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম, একই বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, আমীরুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় অর্ধশত শিক্ষক-কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন