জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ছিনতাই ও ‘ধর্ষণ’ চেষ্টাকালে দুই বহিরাগত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার নাজমুল হাসান (৩২) সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) ক্যাফেটেরিয়ায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মরত। আর আলামিন (২৮) একই প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পে দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কর্মরত।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় এক নারী শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুকে আটকে ছিনতাই করে তিন বহিরাগত যুবক । এ সময় টাকা না দিলে ধর্ষণের হুমকি দেয় তারা। ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় সোপর্দ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত একজন পালিয়ে গেছেন।
এ ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কিংবা প্রক্টরিয়াল বডির কাউকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
এমন ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির অনুপস্থিতির ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করে জাবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রববানী বলেন, ‘কার্যত প্রক্টর পরিবর্তন হলেও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। যেটি একটি ব্যর্থতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের উদাসীনতায় আজ এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমার বন্ধু ও আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনপুরা এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় অপরিচিত তিনজন যুবক আমাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ও ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখার পর আমার বন্ধু রুহুল আমিন সুকৌশলে টাকা আনার কথা বলে তার বন্ধুদের ফোন করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম বরকত হল থেকে একদল শিক্ষার্থী গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল বলেন, ‘ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরকে জানানো হয়েছে। পরে রেজিস্ট্রারের অনুমতি সাপেক্ষে আটককৃতদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।’
এ ছাড়া প্রক্টরিয়াল বডির গাফিলতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হতে পারিনি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যের জানাজা শেষ করে আসতে রাত ৮টা পেরিয়ে যায়। তবে সহকারী প্রক্টরদের অনুপস্থিতির বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’
মন্তব্য করুন