এবারের পাঠ্যবই দৃষ্টিনন্দন হবে, অনিয়ম হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব এ কথা জানান।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এবারের মুদ্রণে যেহেতু বাণিজ্য হবে না, পাঠ্যবইগুলো দৃষ্টিনন্দন হবে, কাগজ এত খারাপ হবে না, ছাপায়ও বেশি ভুল থাকবে না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে যতটুকু পারি কমিয়ে এনে, নিজে দায়িত্ব নিয়ে চেষ্টা করব বইগুলো যাতে ঠিক সময়ে মুদ্রিত হয়। আর্থিক অনিয়ম হবে না এটি আমি নিশ্চিত করব। লেখায় কী ধরনের পরিবর্তন আসবে তা নির্ধারণে আমরা একটি কমিটি তৈরি করে দিচ্ছি। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে আমাদের গাইডলাইনে তিনি তৈরি করে দিবেন।
টেন্ডারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে যা আছে সব বন্ধ। ৩৫-৩৬ কোটি বই এত কম সময়ে ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যতটুকু পারি চেষ্টা করব।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য ও অন্যান্য পদে নতুন নিয়োগের বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগে শিক্ষকদের রাজনৈতিক সংগঠন থেকে একজনকে উপাচার্য বানিয়ে দেওয়া হতো। আমাদের ক্ষেত্রে তো সেই সুযোগ পাচ্ছি না। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষককে আমরা চিনি, তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব এবং প্রশাসনিক দক্ষতার দিক থেকে যারা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এ রকম শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করছি। যত দ্রুত সম্ভব আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ দেব।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো থেকেও অনেক শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেকে আবার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নিজে থেকে সরে যাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, দেশের বেসরকারি কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল। তাতে শিক্ষক নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে সেটা ছিল পুঞ্জীভূত অনিয়ম। অসঙ্গত কারণে অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ রকম হাজার হাজার অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এগুলো নীতিগত সিদ্ধান্ত ছাড়া তো ঠিক করা যাবে না। তবে কথা হচ্ছে শিক্ষাঙ্গনে ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে, বল প্রয়োগ করা যাবে না, ব্যক্তিগতভাবে অপমানিত করা যাবে না।
নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই সংস্কার প্রসঙ্গে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে অনেক দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাক্রম অনেক দুর্বল। তবে আমাদের হাতে সময় নেই, যতটুকু পারি পরিবর্তন করা হবে। এ ছাড়া জানুয়ারি মাস আসতে বেশি দিন সময় নেই। এরমধ্যে সারা দেশের পাঠ্যবই তৈরি করতে হবে। এই পাঠ্যবই ছাপার চক্র রয়েছে। যারা কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করেছে। সময় থাকলে পুরো শিক্ষাক্রম সাজিয়ে নতুন বইগুলো দিতে পারতাম।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষানীতি করতে চাইলে অনেক সময় লাগবে। তবে আশা করছি আধুনিক শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য প্রারম্ভিক সূচনা করে যেতে পারব।
মন্তব্য করুন