ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে কক্ষে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনসহ উলঙ্গ করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৮ মে) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া স্ট্যাটাসের পাশাপাশি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নিজেই, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুক পোস্টে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি রাকিবুল ইসলাম, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। ১৮ মে ২০২৫ দুপুরে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী আমার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন চেক করে এবং আমাকে বিভিন্নরকম হুমকি প্রদান করে। রাত ৯টার দিকে, ২৩-২৪ সেশনের ৮-১০ জন ছাত্র আমার রুমে ঢুকে আমাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, তারা আমাকে একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে যায় এবং শারীরিক নির্যাতন করে। এরপর আমাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। তারা আমাকে সেই ছবি-ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং শঙ্কিত। আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে আছি। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি।
নিজ আইডিতে দেওয়া ভিডিওতে ভুক্তভোগী রাকিব বলেন, আমি হলে থাকি, আমার পাশের রুমের ছাত্রদলের কিছু লোক আমাকে তাদের রুমে নিয়ে যায়। তারা আমাকে ছাত্রলীগের ব্লেম (দোষারোপ) দিয়ে মারধর করে, বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে, ঝাড়ু, লাঠি, ছুড়ি ও মদের বোতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নেয় যে, আমি ছাত্রলীগ করতাম। তারা এ রকমও আমাকে হুমকি দেয় যে, আমাকে তারা মেরে ফেললেও কেউ এর বিচার করবে না। তারা পাশের রুম থেকে পিস্তল ও ছুড়ি আনার হুমকি দেয়। তারা বলে পিস্তল এনে আমার পায়ে গুলি করবে। একপর্যায়ে আমাকে জোরপূর্বক আমাকে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করে।
অভিযুক্তরা হলেন, সৈকত (ইলেকট্রনিকস), স্বাধীন (ইলেকট্রিক্যাল), ফয়েজ (সিভিল), নাফিউর রহমান (ইলেকট্রনিকস), অনিক (ইলেকট্রনিকস), সচিন (ইলেকট্রিক্যাল), মুন্না (কম্পিউটার), মেহেদী (মেকানিক্যাল), নিজুম (মেকানিক্যাল)।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী একটি গণমাধ্যমকে জানান, নির্যাতনকারীদের হাতে প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাস ও হলে থাকা ছাত্ররা নির্যাতিত হচ্ছে। এরা সবাই আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন ছাত্রদলের নাম করে অত্যাচার করছে। এদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। ইনস্টিটিউট প্রশাসন সবকিছু জেনেও নীরব ভূমিকা পালন করছে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেলা পারভীন একটি গণমাধ্যমকে জানান, এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি জানেন না।
মন্তব্য করুন