ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেছেন, ঢাবির বর্তমান ভিসি-প্রক্টর দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা আজকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আপনারা পদত্যাগ না করলে আমরা প্রয়োজনে এই প্রশাসনিক ভবনে তালা মারব।
সোমবার (২৬ মে) দুপুর ১২টায় সাম্য হত্যার বিচার, ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ঢাবি উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে এ হুমকি দেন তিনি।
এদিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা উপাচার্যের কার্যালয়ের গেট অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ‘আমার ভাই সাম্য, ন্যায়বিচার কাম্য’, ‘১৩ দিন হয়ে গেল, কেউ কিছু জানে না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে পারে না’, ‘অবিলম্বে সাম্য হত্যার, বিচার চাই করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি সাহস বলেন, এই প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তোফাজ্জল হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার পর যদি নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হতো তাহলে সাম্য হত্যার ঘটনা ঘটতো না। সাম্য হত্যার আধা ঘণ্টার মধ্যেই আমরা দেখলাম একটি মহল নানা ন্যারেটিভ দাঁড় করাচ্ছে। আপনারা সসম্মানে পদত্যাগ করুন। সারাদেশ আপনাদের বাহবা দিবে। আমরা এতদিন সহনশীলতার সঙ্গে আন্দোলন করেছি। আমাদের দাবি না মানলে আমরা প্রয়োজনে এই প্রশাসনিক ভবনে তালা মারব।
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, আমাদের ভাই সাম্য হত্যার ১৩ দিন পার হলেও আমরা বিচারকার্যের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাইনি। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছিল তারা সেই দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। আজকের কর্মসূচিতে আমরা শেষবারের মতো এই ব্যর্থ ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি। আপনারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনারা যদি মনে করেন আর পারছেন না, তাহলে পদত্যাগ করুন। আমরা ফুলের মালা দিয়ে আপনাদের বিদায় দিব।
শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বি এম কাওসার বলেন, হাসিনা পালানোর পরে আমরা এই ইন্টেরিম সরকার ও ভিসিকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। সাম্য হত্যার বিচার করা তো তাদের প্রধান দায়িত্ব। আমরা কেন বিচার চাইব? এই ভিসি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এজন্য ঢাবির ছাত্রদের ব্যাপারে ভিসির কোনো আবেগ অনুভূতি নেই। ভিসিকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছি। উনি যদি সাম্য হত্যার বিচার করতে না পারেন তাহলে আমরাই ওনাকে টেনে নামাব।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তদন্ত কমিটি আজ সকালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন
আর্কাইভ 
| ১৫ জুলাই ২০২৫ 
