নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, গত জানুয়ারিতে এরা সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার লক্ষ্যে বই নিয়ে মিথ্যাচার করেছিল। এরা চায় না শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখতে, চিন্তা করতে শিখুক, অনুসন্ধিৎসু হোক, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করুক। ওরা চায় মগজ ধোলাইয়ের শিক্ষাই চালু থাকুক।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানী সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন কারিকুলাম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে কোনো পরিবর্তনই মেনে নিতে, খাপ খাইয়ে নিতে কষ্ট হয়। শিক্ষার রূপাস্তরে জন্য নতুন কারিকুলাম এগিয়ে নেওয়া অবশ্যম্ভাবী। তার কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে নিজে যাচাই করুন।
সঠিক তথ্য জানতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের ফাঁদে পা না দেওয়ায় অনুরোধ জানান।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী নাগরিক তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থার রূপান্তরের জন্য নতুন কারিকুলাম গ্রহণ করা হয়। নতুন এই কারিকুলাম শিক্ষাব্যবস্থার রূপান্তরের মধ্যে দিয়েই ভবিষ্যতের স্মার্ট শিক্ষার্থীর বুনিয়াদ রচিত হবে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের উদ্দেশে শিক্ষাব্যবস্থার সকল ধারাকে বিবেচনা করে প্রথমবারের মতো জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা- ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ রূপরেখা প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে বিস্তারিত শিক্ষাক্রম, শিখনসামগ্রী এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া প্রণয়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যা এর আগে কখনোই অনুসরণ করা হয়নি।
নতুন কারিকুলামে সন্তানদের অভ্যস্ত করতে অভিভাবকরা প্রতি আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনার সন্তানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভাবুন। তাদের দক্ষ, যোগ্য মানুষ হবার কথা ভাবুন। তাদের যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে উৎকর্ষ লাভের কথা ভাবুন। এবার প্রতিযোগিতায় চিন্তা থেকে বেরিয়ে সহযোগিতার, সহমর্মিতার চর্চার মধ্য দিয়ে সন্তানের ভালো মানুষ হওয়ার কথা ভাবুন।
দীপু মনি বলেন, শিক্ষকদেরও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ চলছে। তাদেরও জীবনমান উন্নয়নে সরকার আরও পদক্ষেপ নেবে। কারণ এরও কোনো বিকল্প নেই।
বতমান সরকারের চলতি মেয়াদে নতুন শিক্ষা আইন পাস হবে না বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এ মেয়াদে শিক্ষা আইন পাস সম্ভব না। পরবর্তী সংসদে শিক্ষা আইন পাস হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল আহসান নওফেল, মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীনালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
মন্তব্য করুন