

ঢাকাই চলচ্চিত্রের পর্দায় যিনি বরাবরই ভয়ংকর খলনায়কের প্রতীক, বাস্তব জীবনেও তাকে ঘিরে উঠেছিল ভয়াবহ অভিযোগের ঝড়। জনপ্রিয় অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও তার ব্যক্তিগত সহকারীর বিরুদ্ধে অ্যাসিড নিক্ষেপ ও মারধরের যে চাঞ্চল্যকর মামলা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, সেই ঘটনায় এবার নাটকীয় মোড়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, সেই অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক সুলতান মাহমুদ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলমের আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিদা আক্তার ডিপজলের অন্ধ ভক্ত। বিভিন্ন সময় ডিপজলের সঙ্গে দেখা করতে এফডিসিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন রাশিদা। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২ জুন বাদী গাবতলী গরুর হাটে ডিপজল আছে ভেবে তার সঙ্গে দেখা করতে যায়।
তখন গাবতলীতে কোরবানির পশুর হাট চলছিল। বাদী পশুর হাটের হাসিল ঘরের ভেতরে ডিপজল আছেন ভেবে সেখানে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। তখন হাসিল ঘরের ম্যানেজারসহ অন্যান্য কর্মীরা ডিপজল সেখানে নেই বলে জানান এবং হাসিল ঘরে প্রবেশে বাধা দেন। এ সময় রাশিদা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে উৎসুক জনতা এসে ভিড় করতে থাকে। হাটের লোকজন তাকে চলে যেতে অনুরোধ করে।
তবে রাশিদা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে উৎসুক জনতা তাকে মানসিক রোগী ভেবে সেখানে আটক করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তিনি নিজের কাছে থাকা একটি বোতলে রক্ষিত কেমিকেল জাতীয় পদার্থ নিজের শরীরে ঢেলে দিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন।
এরপর সেখানকার পশু ব্যবসায়ীরা তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে তিনি গাবতলী পশুর হাট থেকে বের হয়ে যান।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ওইদিন রাত ৯টার দিকে বাদী তার যাত্রাবাড়ীর বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলে শুয়ে পড়েন। রাত ২টার সময় চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তার স্বামী আব্দুল মজিদ ঘুম থেকে উঠে দেখেন, বাদীর সারা শরীরে ফোসকা পড়ে গেছে। পরের দিন দুপুর ৩টার দিকে আব্দুল মজিদ, প্রতিবেশী রুবি এবং মুক্তা আক্তার বাদীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জরুরি বিভাগ থেকে পরদিন তাকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের ওয়ার্ডে বাংলা সিনেমার একটি গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টিকটক ভিডিও বানিয়ে তা ইন্টারনেটে আপলোড করেন।পরে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ১১ জুন হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন।
মন্তব্য করুন