লাক্স সুপারস্টারখ্যাত অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ আবারও উঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। স্পষ্টভাষী হওয়ায় তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বরাবরই ছিলেন সাহসী কণ্ঠস্বর, তবে এবার তার শেয়ার করা এক অভিজ্ঞতা রীতিমতো চমকে দিয়েছে ভক্তদের। প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে অতীতের এক ভয়াবহ অধ্যায় নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রসূন। সেই গল্পে উঠে এসেছে মানসিক নিপীড়ন, সম্পর্কের বিষ এবং এক নারীর আত্মসংগ্রামের গল্প।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ফেসবুকে প্রসূন তার সাবেক প্রেমিককে নিয়ে লিখেছেন, বছর ১০ আগে আমার এক সাবেক প্রেমিক ছিল। যে দুই দিন পর পর আমাকে হুমকি দিত সে নাকি রাস্তায় রাস্তায় পোস্টার ছাপাবে যেগুলো আমার জীবন নষ্ট করে ফেলবে। তো আমি আগ্রহবশত জানতে চেয়েছিলাম পোস্টারে কি এমন থাকবে যা দেখে আমার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে? সে বলল, আমার নুড ছবি। বললাম, আমি তো কখনো নেংটু হয়ে ছবি তুলি নাই, কয়েকটা ভালো ছবি তুলো, কারণ আমি জানি না তোমার কাছে কি কি আছে, ওগুলো হয়তো এডিট করা। তুমি বরং আমার সত্যি কিছু ছবি তুলো নইলে এডিট করা ছবি দেখে আমার আসলেও মরে যেতে ইচ্ছে করবে। এতেও তাকে খুব একটা হিউমার স্পর্শ করতে পারল না। তারপর সে আমাকে হুমকি দিয়েছে ছবি নেটে ছেড়ে দিব। আমি বললাম ছাড়। আমি তো একা ছিলাম না সাথে তুমিও আছ। কিন্তু আমাকেও দেও আমিও দেখতে চাই কেমন লাগছে আমাকে। সে ছবি আর পেলাম না। কারণ, এমন ছবি নেই। যদি থাকত তবুও আমার উত্তর এমনই হতো।
তিনি আরও লিখেছেন, আমি এখন বিবাহিত। সংসার আছে। আলাদা সমাজ আছে। সন্তান আছে। এসব বলা আমাকে মানায় না। কিন্তু বলতে বাধ্য হলাম। ছেলে বা মেয়ে না, কেউ কাউকে ধোঁকা দিলে জীবন শেষ করে দেওয়া যাবে না, বাঁচতে হবে। সে বাঁচতে চাওয়ার জন্য আমাকে অবশ্য বেশ পরিমাণে বেগ পেতে হয়েছে। কখনো কখনো নিজেকে শিকল দিয়েও বেঁধে রাখতে হয়েছে। আমি মানতে পারতাম না কি করে এমন কুৎসিত একজন লোক আমাকে স্পর্শ করল। তার স্পর্শ আমাকে এতটাই পীড়া দিয়েছিল যে, আমি বহুদিন চেষ্টা করেছি সে যন্ত্রণা শেষ করতে নিজের জীবন দিয়ে দিতে, কিন্তু পারিনি । নিজের প্রতি ভালোবাসা আমাকে থামিয়ে দিয়েছে।
প্রসূন আরও বলেন, একটা মেয়েদের গ্রুপে লেখালেখি হচ্ছে দেখলাম। নুড ছবি ছেড়ে দেওয়ার কারণে এক মেয়ে মরে যেতে চাইছে। এরকমভাবে জীবন নষ্ট করার কোনো অর্থ আমি খুঁজে পাই না। ভালোবেসে মানুষ বিবস্ত্র হয় আবার সেটার ছবিও তোলে, তা আবার বহু মানুষকে দেখানোতে কি এমন মহত্ব বুঝি না। উপরে অনেক শক্ত হলেও মাঝে মাঝেই আমি ভেঙে পড়ি।
বিয়ের পরেও এমন ট্রমা থেকে বের হতে পারেননি এ বিষয়ে উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, বিয়ের পরও এমন অনেক রাত গেছে চিৎকার করে আমি ঘুমের মধ্যে কথা বলতাম, উঠে দাঁড়িয়ে যেতাম, কাঁদতে কাঁদতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যেত। ফারজাদের বাবা আমাকে ভালোবাসে কি না এখনো আমি জানি না।
কিন্তু এমন এমন সিচুয়েশনে হুঁস আসার পর দেখতাম ফারহান আমাকে শক্ত করে ধরে রাখত। আজকে আমাদের পরিচয় ৭/৮ বছরের মতো। সংসার ৪ বছর । আল্লাহর দেওয়া দুটো শিশু আছে। এখন পর্যন্ত সে কখনো জানতে চায়নি আমার অতীত কেমন ছিল, আমি কেন সব কিছু ভুলে নিজের মতো আছি।
মন্তব্য করুন