

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর বড় কারণ নিউমোনিয়া। নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়া শিশুর অর্ধেকের বেশি চিকিৎসা শুরুর আগে মারা যাচ্ছে। কারণ বিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। শিশুদের সুরক্ষায় পরিবারকে সচেতন হতে হবে। নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যু কমাতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দৈনিক কালবেলা ও এসএমসি স্মাইল বেবি ডায়াপার আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, নিউমোনিয়া দেশে এখনো শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ। প্রতি বছর দেশে প্রায় ৬০ লাখ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ২৪ হাজার শিশু মারা যায় নিউমোনিয়ায়। প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছে ৭৪ শিশু। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে দুই বছর বা তার কম বয়সী শিশুরা। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে কম। এ ছাড়া অপরিপক্ব জন্ম নেওয়া শিশুদেরও নিউমোনিয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। নিউমোনিয়ার লক্ষণ হলো—তিন দিনের বেশি জ্বর, খিটখিটে মেজাজ, শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা আর শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা। প্রান্তিক পর্যায়ে আমাদের বড় সমস্যা জ্বর, ঠান্ডা, কাশিতে আক্রান্ত হলে শিশুকে পল্লি চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হলে চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হোন অভিভাবকরা। নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা গেলে কাল বিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
তারা বলেন, নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর বড় কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার। দেখা যাচ্ছে, ভাইরাল নিউমোনিয়া হলেও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে আক্রান্তকে সঠিক সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক দিলেও আর কাজ হয় না। ঠান্ডা-কাশি হলেই নিকটস্থ ফার্মেসি থেকে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শের বাইরে কোনো শিশুকে ওষুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে একটি সুস্থ জাতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েফ নাসির বলেন, ভালো পণ্য হলেও যথাযথ ব্যবহার ছাড়া সুফল পাওয়া দুষ্কর।
তিনি বলেন, এসএমসি স্মাইল বেবি ডায়াপার অন্তত ১২ ঘণ্টা শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করে। শুষ্ক রাখে। সঠিক সাইজ এবং ফিট ডায়াপার শিশুকে ঠান্ডা থেকে সুরক্ষা দেবে। এজন্য সন্তানের জন্য ভালো ডায়াপার এবং সঠিক মাপের ডায়াপার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে শীত মৌসুমে শিশুদের নিউমোনিয়া থেকে অনেকটা সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।
দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মার সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েফ নাসির, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিডফোর্ড হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. কামরুল আহসান, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আক্তার, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরীন কিরন, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. তানিয়া ইসলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. লুতফুন্নেসা, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, দৈনিক কালবেলার স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) সভাপতি রাশেদ রাব্বি, আইসিএমএইচ মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউটের নার্সিং প্রিন্সিপাল মাকসুদা ইয়াসমিন, সিভিল স্কুল বাংলাদেশ চাইল্ডচিয়ার ডে-কেয়ার সেন্টারের পরিচালক ফারহানা রশিদ, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের স্মাইল বেবি ডায়াপারের ব্র্যান্ড ম্যানেজার নজ্জর চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন